সাদিক খানের চাপে পড়ে পদত্যাগ করলেন পুলিশ কমিশনার

প্রকাশিত: ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ, |                          

হোম সেক্রেটারি প্রীতি প্যাটেল বলেছেন, লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এখন শক্তিশালী এবং দৃঢ়সংকল্প নেতৃত্ব প্রয়োজন। মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ডেইম ক্রেসিডা ডিক পদত্যাগের পর হোম সেক্রেটারি এ কথা বললেন। লন্ডন মেয়রের আস্থা হারিয়ে ফেলার কারণে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন ডেইম ক্রেসিডা ডিক। যদিও তাঁর বিশ্বাস ছিল, বিপর্যস্ত এই পুলিশ বাহিনীতে তিনি পরিবর্তন আনতে পারবেন।

ক্রেসিডা ডিক সর্বপ্রথম জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ২০০৫ সালে অফিসার-ইন-কমান্ড হিসেবে, যখন ব্রাজিলিয়ান নাগরিক জো চার্লস ডে মেনেজেসকে ভুল করে গুলি করে পুলিশ। হত্যার বিচারে জুরিরা একমত হন, সেই গুলির ঘটনায় ক্রেসিডা ডিক ব্যাক্তিগতভাবে দোষী নন।

তিনি মেট কমিশনার থাকাকালে দুই পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার শিকার দুই বোন বিবা হেনরি ও নিকোল স্মলম্যানের মৃতদেহের ছবি তোলে এবং তা নিজেদের ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করে আপত্তিকর ভাষায় মৃতদেহের বর্ণনা দেয়।

আর সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনা হলো, একজন পুলিশ কর্মকর্তা সারাহ এভেরারড নামের এক তরুণীকে মিথ্যা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে।

এছাড়া চ্যারিংক্রস পুলিস স্টেশনের একদল পুলিশ কর্মকর্তা তাদের ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে হতবাক করার মতো ভাষায় নারীবিদ্বেষী, বর্ণবাদী, ও সমকামবিদ্বেষী বার্তা বিনিময় করে।

এবং লকডাউন চলাকালে ডাউনিং স্ট্রীটে পার্টি আয়োজনের অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে ধীর গতিতে কাজ করে মেট পুলিশ।

সেরা স্যাক নামে এই নারীর ছেলে এন্থনি ওয়ালগেটকে হত্যা করে ধারাবাহিক হত্যাকারী স্টিফেন পোর্ট। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তারা এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার এক বছর পরেও মৃত্যুর কারণ জানতে পারেননি। এন্থনি ওয়ালগেটের মা মনে করেন, এই ঘটনাই প্রমাণ করে মেট পুলিশ অনেক সমস্যায় জর্জরিত।

চ্যারিংক্রস পুলিস স্টেশনের পুলিশ কর্মকর্তাদের ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ২০১৮ সালের কথোপকথন সম্প্রতি ফাঁস হয়। গ্রুপে ধর্ষণ নিয়ে কৌতুক করার পাশাপাশি আফ্রিকান শিশুদের কুকুরের খাদ্যে পরিণত করার বিষয়ে কথা বলেন এসকল পুলিশ কর্মকর্তা। এসব জেনে লন্ডন মেয়র উপলব্ধি করেন, পুলিশের অভ্যন্তরে গভীর সংস্কার প্রয়োজন।

কন্সটেবুলারির সাবেক ইন্সপেক্টর জোয়ি বিলিঙহাম বিশ্বাস করেন, পুলিশের অভ্যন্তরে সংস্কার সাধন বড় একটি কাজ, কিন্তু অসম্ভব নয়।

কিন্তু সমস্যা কি কেবল লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশে, নাকি সারা দেশের পুলিশেই এই সমস্যা বিরাজ করছে?

ভালো কোনো বিকল্প না পেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিস কমিশনার হিসেবে ডেইম ক্রেসিডা ডিকের চুক্তি গত বছরেই নবায়ন করেছিলেন হোম সেক্রেটারি। এখন সমস্যায় জর্জরিত এই পুলিশ বাহিনীর জন্য নতুন একজন প্রধানকে খুঁজে বের করতে হবে হোম সেক্রেটারির। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে।