আগুন নিয়ে খেলাঃ বৃদ্ধার মৃত্যু

প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ণ, |                          

২০২১ সালের অক্টোবর মাসের এক দিন পূর্ব লন্ডনের রমফোরড এলাকার বাসিন্দা ৮৮ বছর বয়সের বৃদ্ধা জোসেফিন স্মিথ নিজের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। তখন তাঁর ঘরের লেটার বক্সের ভেতর দিয়ে আতশবাজিতে আগুণ লাগিয়ে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। শয়েই আগুনে তাঁর মৃত্যু হয়। এই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক টিনেজার আতশবাজিতে আগুণ লাগিয়ে লেটার বক্সে ঢুকিয়ে দিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ফায়ারওয়ার্ক বিস্ফোরিত হওয়ার দৃশ্যও রেকর্ড হয়। এর পড়েই ঘরের ভেতরে আগুণ ধরে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর ফায়ার ফাইটাররা জোসেফিন স্মিথকে ঘরে মৃত অবস্থায় পান।

সারি অঞ্চলের লেদারহ্যাড এলাকার বাসিন্দা কাই কুপার ও তাঁর এক বন্ধু শুক্রবার ওল্ড বেইলি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ এবং অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ২০২১ সালে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সময়ে কাই কুপারের বয়স ছিল ১৮ আর তাঁর সাথে থাকা অন্য কিশোরের বয়স তখন ছিল ১৫। বয়স কম হওয়ার কারণে তাঁর নাম প্রকাশ করা যাচ্ছেনা।

অগ্নি সংযোগের আগে দুই কিশোর গিয়েছিল এই দোকানে। এক দোকান থেকে তাঁরা কয়েক প্যাকেট আতশবাজি কেনে। কেনার সময় দোকানিকে কাই কুপার বলেছিলঃ আজ রাতে মানুষ ভয় পাবে। মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য কোনটা কিনলে ভালো হবে? স্থানীয় হেইভারিং কাউন্সিল জানিয়েছে, গত গ্রীষ্ম মৌসুমে তাঁরা এই দোকানের লাইসেন্স বাতিল করে দেয়, কিন্তু আদালতে আপিল করে এখনও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মালিক পক্ষ।

আতশবাজি কেনার পর দুই কিশোর গাড়ির কাছাকাছি, পাবের নিকটবর্তী স্থানে, চিপসের খোলা দরজায়, এমনকি হেঁটে যাওয়া সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে আতশবাজি ছুঁড়তে থাকে। এসব দৃশ্যও রেকর্ড হয় সিসি ক্যামেরায়। এরপর কোনো বাছবিচার ছাড়াই দুই কিশোর যায় জোসেফিন স্মিথের ঘরের দরজায়। সেখানে কাই কুপার তাঁর বন্ধুকে আতশবাজিতে আগুণ ধরিয়ে দরজার ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে বলে।

এই দুই কিশোর আগেও বেশ কয়েকটি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। বয়সে ছোট কিশোর অটিজমে আক্রান্ত। ইতোপূর্বে সে রাস্তাঘাটে মারামারি, শান্তি বিনষ্ট করা এবং যেখানে সেখানে আগুণ ধরিয়ে দেয়ার মতো অপরাধ করেছে। আর কাই কুপার রাস্তাঘাটে মানুষকে পেটানো আর ছিনতাইয়ের মতো ঘটনায় অভ্যস্ত ছিল। কম বয়সের কিশোরকে ৩ বছর ৮ মাসের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত আর কাই কুপারকে সাড়ে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন জোসেফিন স্মিথ এর পরিবার।

আতশবাজি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কঠোর আইন প্রয়োগের আহবান জানিয়েছেন জোসেফিন স্মিথ এর ছেলে। যেমনঃ ক্রেতার বয়স বাড়িয়ে দেয়া যেতে পারে।