সুইসকন্টাক্টের অ্যাচিভিং সাসটেইনেবিলিটি টুওয়ার্ডস হেলথকেয়ার অ্যাক্সেস (আস্থা) প্রকল্প এর উদ্যোগে সেমিনার অনুষ্ঠিত

সিলেট নিউজ ওয়ার্ল্ড
প্রকাশিত অক্টোবর ২১, ২০২৫
সুইসকন্টাক্টের অ্যাচিভিং সাসটেইনেবিলিটি টুওয়ার্ডস হেলথকেয়ার অ্যাক্সেস (আস্থা) প্রকল্প এর উদ্যোগে  সেমিনার অনুষ্ঠিত

সুইসকন্টাক্টের অ্যাচিভিং সাসটেইনেবিলিটি টুওয়ার্ডস হেলথকেয়ার অ্যাক্সেস (আস্থা) প্রকল্প এর উদ্যোগে সিলেট বিভাগীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। গত ২০ অক্টোবর রবিবার সকালে নগরীর উপশহরস্থ একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কমিউনিটি প্যারামেডিক (সিপি) সেবার সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্ট (সিসিএইচএসটি)-এর চেয়ারপারসন ডাঃ আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ডিজিএইচএস’র বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ মোঃ আনিসুর রহমান, ডিজিএফপি’র বিভাগীয় পরিচালক আবু সালেহ মোঃ ফোরকান উদ্দিন, ডিজিএইচএস’র পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডাঃ আবু হোসেন মোঃ মইনুল আহসান। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর (ডিজিএফপি), কমিউনিটি প্যারামেডিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (সিপিটিআই), স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ, উন্নয়ন সংস্থা এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ জাকির হোসেন কমিউনিটি প্যারামেডিকদের জাতীয় স্বাস্থ্য কাঠামোতে সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, প্রতিটি নারী নিরাপদ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব সেবা পাওয়ার অধিকারী। তবুও অনেক দুর্গম এলাকায় গর্ভবতী নারীরা সময়মতো এবং মানসম্পন্ন সেবা পেতে প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। আমরা কমিউনিটি প্যারামেডিকদের সম্পৃক্ত করে এবং তাদের কাজ পর্যবেক্ষণ ও তাদের সুযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করতে পারি। তিনি বলেন, কমিউনিটি প্যারামেডিকরা নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে এবং গ্রামীণ বাংলাদেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে আরও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিজিএইচএস’র বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রচারাভিযানের মতো সচেতনতা ও আউটরিচ কার্যক্রমে সিপিদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে দুর্গম সম্প্রদায়ের কাছেও অত্যাবশ্যকীয় স্বাস্থ্য তথ্য ও সেবা প্রসারিত করতে পারি। সিলেট সেমিনারে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে আরও শক্তিশালী সমন্বয়, উন্নত জন-বেসরকারি সহযোগিতা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে সিপিদের অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি এই সংলাপের ফলাফল আসন্ন জাতীয় পর্যায়ের কর্মশালায় অবদান রাখবে এবং বাংলাদেশের সর্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজ (ইউএইচসি) অর্জনের যাত্রাকে সমর্থন করবে।
সেমিনারে ২০১১ সাল থেকে আস্থার অবদান তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি প্যারামেডিকদের প্রশিক্ষণ, তাদের সেবার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পদ্ধতিগত সংস্কারের পক্ষে সুপারিশ। বাংলাদেশ নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল (বিএনএমসি) দ্বারা সার্টিফাইড সিপিরা দুই বছরের পূর্ণকালীন কোর্স সম্পন্ন করে এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, কিশোর স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি এবং রেফারেল সেবা প্রদান করে। দুর্গম এলাকায় যেখানে চিকিৎসক প্রায়শই অনুপলব্ধ, সেখানে সিপিরা গ্রামীণ পরিবারের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রথম স্তর হিসেবে কাজ করে। তাদের ক্রমবর্ধমান তাৎপর্য সত্ত্বেও, সিপিরা জনস্বাস্থ্য কাঠামোতে সীমিত স্বীকৃতি, দুর্বল রেফারেল পথ এবং অপর্যাপ্ত আর্থিক ও কর্মজীবনের সুযোগের সম্মুখীন হয়।
সেমিনারে আস্থা সম্পর্কে জানানো হয়, অ্যাচিভিং সাসটেইনেবিলিটি টুওয়ার্ডস হেলথকেয়ার অ্যাক্সেস (আস্থা) বাংলাদেশে সুইসকন্টাক্টের একটি প্রকল্প, যা গ্রামীণ অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস উন্নত করতে এবং যুবকদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে কমিউনিটি প্যারামেডিকদের প্রশিক্ষণ ও সমর্থন করে। ২০১১ সাল থেকে, আস্থা সিপি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে, সেবা প্রদান উন্নত করেছে এবং দেশব্যাপী এই পেশার স্বীকৃতি তৈরি করেছে। এই প্রকল্পটি নোভারটিস, ইভি ডিটহেলম উইনটেলার স্টিফটুং, এবং হ্যাপেল ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য দাতাদের দ্বারা অর্থায়ন করা হয়। এটি সুইসকন্টাক্ট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের অংশ, যা সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন (এসডিসি), ফেডারেল ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স (এফডিএফএ) দ্বারা সহ-অর্থায়ন করা হয়।