ট্রাম্পের বিচার প্রক্রিয়া শুরু ৯ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২১ | আপডেট: ৬:১৯:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২১

মার্কিন মসনদ থেকে বিদায় নিলেও সহসাই মুক্তি মিলছে না আমেরিকার সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই দফা অভিশংসিত হওয়া প্রেসিডেন্টের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি। খবর বিবিসির।

সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিক্যানদের একটি সমঝোতায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রেও রেকর্ড বইয়ে নাম উঠতে যাচ্ছে ট্রাম্পের। কেননা, তিনিই হতে যাচ্ছেন একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পরও দেশটির সিনেটে বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।

এর আগে আমেরিকার ২শ’ বছরের ইতিহাস ভেঙে পার্লামেন্টে হামলার পর ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দু’বার অভিশংসনের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। তবে ক্ষমতা ছাড়লেও বিশ্ব দরবারে আমেরিকার গায়ে যে চুনকালি মাখায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারের ব্যবস্থা করে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট সিনেটররা।

বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগে ডেমোক্র্যাটরা চেয়েছিল অভিশংসন করেই বিচারের মুখোমুখি করবেন ট্রাম্পকে। কিন্তু সে সুযোগ তাদের হয়নি। কংগ্রেসের নিম্নক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবলিক্যান প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘দাঙ্গায় উস্কানি’ দেয়ার অভিযোগে অভিশংসন করে। কিন্তু উচ্চকক্ষে সেটি পাস হতে সময়ের প্রয়োজন ছিল।

কেননা, সিনেটের অধিবেশন ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মূলতবি ছিল। তারপরও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককোনেলের দপ্তর থেকে জরুরি অধিবেশন ডাকার ব্যাপারে সিনেটের সংখ্যালঘু দলের নেতা চাক শুমার একটি প্রস্তাব দেন, তবে তা প্রত্যাখ্যান করে দপ্তর। ফলে ট্রাম্প তার শেষ সময়গুলো হোয়াইট হাউজেই কাটান।

কিন্তু জো বাইডেন শপথ নেয়ার পর পরই ট্রাম্পকে বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি আবারও জোরালো হতে থাকে। যার প্রক্রিয়া ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে। মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন ‘ক্যাপিটল হিলে হামলা’ ও ‘সহিংসতায় উস্কানি’ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন আর্টিকেলটি আগামী সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সিনেটে পাঠাবেন ডেমোক্র্যাটরা।

কিন্তু ৮ ফেব্রুয়ারির আগে এই বিষয়ে শুনানি শুরু হবে না। কেননা, ট্রাম্পের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরার জন্য তার আইনজীবীদের দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে।

এর আগে আর কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দোষি সাব্যস্ত হলে ভবিষ্যতে আর কোনও সরকারি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বারের এই বিচার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ঠিক প্রায় এক বছর পরে, যখন সিনেট তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার আর কংগ্রেসের কাজে বাধা দেওয়ার মতো অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল।

জো বাইডেন এবং তার ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার জন্য ইউক্রেনের ওপর চাপ দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় সেবার তাকে অভিশংসিত করেছিল মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ। ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত ২০ জানুয়ারি এবং তিনি জো বাইডেনের অভিষেকের আগেই ওয়াশিংটন ছেড়ে চলে গেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৬ জানুয়ারি জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমেরিকার সর্বোচ্চ আইন প্রণেতাদের স্বীকৃতির দিনে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। ওই তাণ্ডবে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচ জনের মৃত্যুর হয়। হামলাকারীদের ‘দেশ প্রেমিক’ বলে অভিহিত করেছিলেন ট্রাম্প। যদিও পরে নিজ দেশ ও বিশ্বজুড়ে তুমুল সমালোচনার মুখে নিজের বক্তব্য পাল্টে ফেলেন তিনি। অঙ্গীকার করেন স্বাভাবিক ক্ষমতা হস্তান্তরের। তবে ভোট চুরির অভিযোগ বিদায়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত করে যান মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট।

এরই জেরে মূলত তাকে নির্ধারিত সময়ের আগেই লজ্জাজনকভাবে বিদায় দিতে উঠে পড়ে লেগেছিল প্রতিনিধি পরিষদ। কিন্তু ভাগ্যগুণে শেষ সময় পর্যন্ত হোয়াইট হাউজে থাকতে পেরেছিলেন ট্রাম্প। তবে মসনদ ছাড়া হলেও বিচার থেকে মুক্তি মিলছে তার