কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (কেমুসাস)-এর উদ্যোগে ৯ দিনব্যাপী ১৯তম কেমুসাস বইমেলায় হাতের লেখা ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বইমেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেমুসাসের সহসভাপতি, সাংবাদিক ও কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী বলেন, বইমেলা মানেই জ্ঞানের উৎসব, চিন্তার বিকাশ এবং সৃজনশীলতার উদযাপন। এর সঙ্গে হাতের লেখা ও বক্তৃতার মতো মননশীল প্রতিযোগিতা যুক্ত হলে তা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও নৈতিক বিকাশে অনন্য ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, হাতের লেখা কেবল শব্দ লেখার মাধ্যম নয়; এটি মানুষের ব্যক্তিত্ব, মননশীলতা ও শৃঙ্খলাবোধের প্রতিচ্ছবি। একটি সুন্দর ও পরিপাটি হাতের লেখা যেমন পাঠকের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, তেমনি লেখকের মনকেও করে সুসংগঠিত। অন্যদিকে বক্তৃতা হলো নিজের চিন্তা, যুক্তি ও অনুভূতিকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রকাশ করার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম। বক্তৃতা চর্চার মাধ্যমেই একজন শিক্ষার্থীর নেতৃত্বগুণ, আত্মপ্রকাশের সক্ষমতা এবং সামাজিক সচেতনতা গড়ে ওঠে।
সংসদের কোষাধ্যক্ষ ও বইমেলা উপকমিটির আহ্বায়ক জাহেদুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন বইমেলা উপকমিটির সদস্য সচিব কামরুল আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ গোলজার আহমদ হেলাল। এছাড়াও বক্তব্য দেন কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল এবং কার্যকরি পরিষদের সদস্য ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী শরিফ আহমদ। বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন রেজাউল করিম ও আবু বকর। হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন মোহাম্মদ শরিফ আহমদ ও দেলোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাহিত্যপ্রেমী ও অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিযোগিতায় সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে ৪র্থ থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। ‘খ’ গ্রুপে ৭ম থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে ৭ম থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। ‘খ’ গ্রুপে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সমমানের শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
বইমেলা উপলক্ষে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ১৫ ডিসেম্বর (সোমবার): বিকেল ৩টা—আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার): সন্ধ্যা ৬টা—বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, পুরস্কার প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠান। সাহিত্যপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর এই বইমেলা চলবে ৯ দিনব্যাপী।