সিলেটের জিতু মিয়া পয়েন্টে স্পিড ব্রেকার ও শাহজালাল (রহ:) চতুর নির্মাণের দাবীতে স্মারকলিপি পেশ

সিলেট নিউজ ওয়ার্ল্ড
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫
সিলেটের জিতু মিয়া পয়েন্টে স্পিড ব্রেকার ও শাহজালাল (রহ:) চতুর নির্মাণের দাবীতে স্মারকলিপি পেশ

সিলেটের কাজির বাজার সেতুর উভয় পার্শ্বের রাস্তা প্রশস্তকরণ, স্পিড ব্রেকার ও প্রস্তাবিত শাহজালাল (রহ:) চতুর নির্মাণের দাবীতে জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার আলম এর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন নগরীর সিলভ্যালী টাওয়ারের বাসিন্দা, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, সারি ইউকের মুউলভ্যালি ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের কাউন্সিলার ও সাবেক মেয়র, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসেবী জাহাঙ্গীর হক রাজ।

গতকাল ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন লায়ন্স ক্লাব অব সিলেট সুরমা’র প্রেসিডেন্ট লায়ন বাবলী চৌধুরী ও সেক্রেটারী লায়ন সানজিদা খানম।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বৃহত্তর শেখঘাট এলাকায় ঐতিহাসিক জিতু মিয়ার পয়েন্টে অবস্থিত কাজির বাজার সেতুর প্রবেশ পথ সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। যা হযরত শাহজালাল ইয়েমেনী (রহ:) এর প্রথম পদাপিত স্থান হিসেবে সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যগত দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তবে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত এই সেতু এবং এর তৎসংলগ্ন উভয় পাশের সরুরাস্তা বর্তমানে একটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নং ওয়ার্ডের (বৃহত্তর শেখঘাট, ভাঙ্গাটিকর, কলাপাড়া, ঘাসিটুলা, মোল্লাপাড়া, মজুমদার পাড়া, ডহর, বেতের বাজার, নবাব রোড, মোগলটুলা, খুলিয়াপাড়া, পশ্চিম কাজির বাজার ইত্যাদি) হাজার হাজার নাগরিকরা চলাচল করেন। উভয় পার্শ্বে সরু রাস্তার কারণে সারাক্ষণই অসহনিয় যানজট লেগেই থাকে, যা থেকে এই এলাকায় প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে, যার ফলে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এবং বহু তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় সম্ভাবনাময় তরুণ চিকিৎসক রহিমা জেসীর মর্মান্তিক মৃত্যু এই স্থানের নিরাপত্তাহীনতার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।
জিতু মিয়ার পয়েন্টে ও পার্শ্ববর্তী স্থানে অবস্থিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা যেমন- মঈনুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার মাদ্রাসা, শেখ ছানা উল্লাহ জামে মসজিদ, পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেটের বৃহত্তম কাজির বাজার মৎস্য আড়ৎ, ধান-চালের মিল, চালের পাইকারি ট্রেডিং হাউস, জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, বিএডিসি অফিস, ফরেষ্ট অফিস, সমাজকল্যাণ অফিস, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল, কুষ্ঠ হাসপাতাল ইত্যাদি স্থানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত রয়েছে। এমনকি দক্ষিণ সুরমার নাগরিকসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকদের মূল প্রবেশ পথ এই পয়েন্ট, যা দিয়ে এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিভিন্ন হাসপাতালে অসংখ্য এ্যাম্বুলেন্স সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন পয়েন্ট সংলগ্ন ভিআইপি রোড ও শেখঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। জিতু মিয়ার পয়েন্টে কার্যতঃ কোন ট্রাফিক সিগন্যাল/ বক্স না থাকায় এখানে ভ্রাম্যমান ফলের দোকান, সিএনজি ষ্ট্যান্ড, অটোরিক্সা ষ্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে, ফলে সাধারণ জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই।
উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য নগরীর তালতলাস্থ সিলভ্যালী টাওয়ারের বাসিন্দা, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, সারি ইউকের মুউলভ্যালি ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের কাউন্সিলার ও সাবেক মেয়র, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসেবী জাহাঙ্গীর হক রাজ নিম্নলিখিত দাবিগুলো পেশ করেন।
১. কাজির বাজার সেতুর উভয় পার্শ্বের রাস্তা প্রশস্তকরণ। সেতু পাশ দিয়ে অবস্থিত পূর্ব ও পশ্চিম পাশের রাস্তা বিশেষ করে সেতুর পশ্চিমাংশের বিদ্যমান রাস্তাকে সর্বনিম্ন ২৫ ফুট অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রশস্ত করা, যাতে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল নিরাপদ ও সুগম হয়। ২. প্রস্তাবিত শাহজালাল (রহ:) চতুর বাস্তবায়ন ঃ জিতু মিয়ার পয়েন্টকে হযরত শাহজালাল (রহ:) এর নামে একটি সুসজ্জিত চত্বর হিসেবে গড়ে তোলা, যা সিলেটের ঐতিহ্য রক্ষা করবে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। ৩. ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঃ সেতুমুখে কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রবর্তন, যাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস পায়। সেই সাথে সড়কে স্পিডব্রেকা স্থাপন করা।
এমতাবস্থায়, শেখঘাটসহ আশপাশের এলাকার আপামর জনগণ পক্ষে নগরীর তালতলাস্থ সিলভ্যালী টাওয়ারের বাসিন্দা, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, সারি ইউকের মুউলভ্যালি ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের কাউন্সিলার ও সাবেক মেয়র, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসেবী জাহাঙ্গীর হক রাজ এই স্মারকলিপির মাধ্যমে এলাকাবাসীর দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবীগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার আলম এর প্রতি জোর দাবী জানান।