বাংলাদেশে ভেক্সিন আমদানিকারক বেক্সিমকো; সরকার নয় কেন?

প্রকাশিত: ৬:২১ পূর্বাহ্ণ, |                          

করোনা ভ্যাকসিন আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে করা চুক্তি প্রসঙ্গে দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান।

দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে দুজনের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি। সকলের মনে প্রশ্ন এসেছে ভ্যাকসিন জিটুজি না বানিজ্যিক?

করোনাভাইরাসের টিকা আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে করা চুক্তিটি বাণিজ্যিক, এটি সরকারের সঙ্গে সরকারের (জিটুজি) চুক্তি নয় বলে জানান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান।

অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান জানান, সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ডের টিকা কিনতে যে চুক্তি হয়েছে, তা জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের)। সোমাবর গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তারা।

স্বাস্থ্যসেবা সচিব আবদুল মান্নান বলেন, যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই তিন কোটি ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে, চুক্তির সময় ভারতের হাইকমিশনার উপস্থিত ছিলেন, এর চেয়ে বেশি জিটুজি চুক্তি আর কী হবে? ত্রিপক্ষীয় চুক্তি আমাদের হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে, এটা ঠিক আছে। সেরাম কি ভারত সরকারের অনুমতি ছাড়া কাজ করছে? ভারতের সরকার অনুমতি না দিলে কি এই প্রতিষ্ঠান এই চুক্তি করতে পারত? ক্রিটিক্যালি যেটা জিটুজি করে, সেটা না হলেও এটা জিটুজি।

চুক্তিতে কী বলা ছিলো, জানতে চাইলে সচিব বলেন, চুক্তিতে বলা আছে, যখন ভারত টিকা দেওয়া শুরু করবে, আমরাও শুরু করব। যখন ভারত পাবে, আমরাও পাব। ভারত যত টাকা দিয়ে কিনবে, আমরাও তত টাকা দিয়ে কিনব। না দিতে পারলে টাকা ফেরত দিতে হবে। আরও অনেক কঠিন নিয়মকানুন চুক্তিতে বলা আছে।

ত্রিপক্ষীয় চুক্তি কী করে জিটুজি হয়, জানতে চাইলে সচিব বলেন, বেক্সিমকো কী? বেক্সিমকো একটি এজেন্ট। তার সঙ্গে আমাদের কোনো কিছু আসে যায় না। বেক্সিমকো আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে। আমরা যখন কোনো কাজ করি, ঠিকাদার নিয়োগ দিই না? সেই রকমই। এটাই আসল কথা। এ বিষয়গুলোকে জটিল করার কিছু নেই।

স্বাস্থ্যসচিবের বক্তব্য প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান বলেন, এখানে জিটুজির কোনো প্রশ্নই ওঠে না। মানে আমার জানা নেই। আপনারা যে জিটুজির কথা বলছেন, স্বাস্থ্যসচিব বলেছেন, উনি কোন ভ্যাকসিনের কথা বলছেন, আমি জানি না। এটা হতে পারে অন্য ভ্যাকসিন। গভর্নমেন্টের অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি থাকতেই পারে আমার জানা নেই।

তিনি বলেন, এটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি। ব্যাংক গ্যারান্টি সরকারের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। সরকারের এটা পৌঁছে দিতে হবে। এখন বাকি আছে রেজিস্ট্রেশন। দেশে রেজিস্ট্রেশন কবে পাবে জানি না। আমরা ডকুমেন্ট আগেই জমা দিয়েছি বৃহস্পতিবার। আজ আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে। এখন অনুমোদন কখন দেবে তাদের ব্যাপার। এখন বাকি যেটা আছে সরকারের পক্ষ থেকে।

তিনি জানান, এরই মধ্যে করোনার টিকা পরিবহনের জন্য সাতটি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষায়িত কুল বাক্স আনা হবে। ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় গুদাম তৈরি করা হয়েছে।

নাজমুল হাসান বলেন, লজিক্যালি আমরা যে ব্যবসা করে আসছি সেভাবে বলছি। এটা বাণিজ্যিক চুক্তি। আমরা শুধু সরকারকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি।