সিলেট ২৮শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:২০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের আরও একটি নতুন স্ট্রেইন (বৈশিষ্ট্য) শনাক্ত হয়েছে, যাতে দুই জন আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এ তথ্য জানিয়েছেন। লন্ডন এবং উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের আক্রান্ত ওই দুই ব্যক্তি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে এসেছে এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। নতুন স্ট্রেইনের এই করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আফ্রিকা।
এ ঘটনার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত ১৪ দিনে যারা দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণ করেছেন কিংবা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের অতি সত্ত্বর কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এরইমধ্যে এই ভাইরাসটি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোয়াইলি ম্যাখিজে সতর্ক করে বলেছেন, ‘তরুণ, আগে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন এমন ব্যক্তিরাও ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’ তিনি বলেন, ‘এইডস মহামারির শুরুর দিকে যে অবস্থা পার করেছি, সেই একই অবস্থা আমরা আবারও পার করতে পারবো না।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসের এই বৈশিষ্ট্য বা ভ্যারিয়ান্টটি দ্রুত ছড়ায় এবং দেশটির অনেক এলাকায় এর সংক্রমণও বেশি দেখা যাচ্ছে। এই ভ্যারিয়ান্টটি নিয়ে এখনও বিশ্লেষণ চলছে। তবে এ পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে এটি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবারই প্রথমবারের মতো এটি যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়।
বিস্ফোরক প্রাদুর্ভাব
নতুন এই ভ্যারিয়ান্টটির সঙ্গে এর আগে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন বৈশিষ্ট্যের আরেকটি ভাইরাসের কিছুটা মিল রয়েছে। যদিও ভাইরাসটি দুটি আলাদাভাবে বিবর্তিত হয়েছে। দুই ভাইরাসেরই একটি নির্দিষ্ট অংশে এনফাইভজিরো ওয়ানওয়াই নামে একটি পরিবর্তন হয়েছে। ওই অংশটি দিয়ে মানুষের দেহের কোষকে আক্রান্ত করে ভাইরাসগুলো।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক নিল ফার্গুসন বলেন, ‘আমার মনে হয় এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি যে ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ থাকা উচিত সেটি হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাসটি। এই ভাইরাসটির বিস্ফোরকের মতো সংক্রমণের বিস্ময়কর রিপোর্ট রয়েছে এবং এর সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির হারও অত্যধিক।’
ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে হ্যানকক বলেন, নতুন ভ্যারিয়ান্টটি খুবই উদ্বেগজনক এবং যাদের কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের অন্য যে কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। একই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা করেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনার পদক্ষেপ হিসেবে লাখ লাখ মানুষকে ক্রিসমাসের পরের দিন বা বক্সিং ডে থেকেই চতুর্থ পর্যায় বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিধিনিষেধের আওতায় আনা হবে।
যুক্তরাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ডা. সুসান হপকিন্স বলেন, দুইটি ভাইরাসই মনে হচ্ছে অত্যন্ত সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন। তবে তিনি জানান, তারা এখনও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা ভাইরাসটির ভ্যারিয়ান্ট সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন।
ডা. সুসান হপকিন্স বলেন, তিনি বেশ নিশ্চিত যে কোয়ারেন্টিন এবং ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে নতুন ভ্যারিয়ান্টটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব।
ওয়ারউইক মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক লরেন্স ইয়াং বলেন, ‘সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে যে বিধিনিষেধ (হাত, মুখ, অন্যান্য স্থান বিষয়ক) রয়েছে তা নতুন ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়াও ঠেকাবে।’ তিনি বলেন, ‘দেশজুড়ে বিধিনিষেধ আরও কঠোর করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে।’
দক্ষিণ আফ্রিকায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
বিবিসি নিউজের ফারুক চোথিয়া তার ব্যাখ্যায় বলেন, উৎসবের মৌসুমেও সরকার বিধিনিষেধ কঠোর করেছে। এর মধ্যে ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশের বিখ্যাত গার্ডেন রুট সৈকত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স নামে একটি বিরোধী দল এবং কয়েকটি লবি গ্রুপ। তারা আদালতে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছে। তাদের দাবি, সৈকত বন্ধ করে দেওয়া হলে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
বিচারকরা অবশ্য সরকারি সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছেন এবং বলেছেন যে, জনস্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে সরকারের।
ওয়েস্টার্ন কেপের প্রিমিয়ার অ্যালান উইন্ডি বলেন, প্রদেশের হাসপাতালগুলো এরইমধ্যে মারাত্মক ধকলের মুখে পড়েছে। প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় প্রদেশটিতে বর্তমানে বেশি কোভিড-১৯ রোগী রয়েছে।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার-এর হিসাব অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৯ লাখেরও বেশি মানুষের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৬৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা আফ্রিকায় সর্বোচ্চ।
Chief Editor : Afroz Khan
Editor: Sunny Ahmed
Executive editor: Mohammed Taizul islam,
Message editor : Shahan Shah Ahmed
Call: +88 01995-019920
Office : Al Marjan Shoping Centre (3nd Floor), Zindabazar, Sylhet 3100
Email : info.Sylhetnewsworld@gmail.com
২০১০ সাল থেকে শুরু – সরকারি নিবন্ধনের আবেদনকৃত নিউজ পোর্টাল।