প্যারিসের সেইন্ট ডেনিস ইউনিভারসিটির পাশে হবে স্থায়ী শহীদ মিনার

প্রকাশিত: ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩ | আপডেট: ৬:৩০:পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩

তাজ উদদীন (প্যারিস) ফ্রান্স থেকে :

চলছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। আসছে ২১ ফেব্রুয়ারিতে পালিত হবে ৭১তম মাতৃভাষা দিবস। ভাষার এই মাসে মাতৃভাষার প্রতি সম্মান জানাতে প্রস্তুত ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশীরা। ইউনেস্কো, বাংলাদেশ দূতাবাস,
বাংলাদেশি কমিউনিটি এ্যাসোসিয়েশন তুলুজের উদ্যোগে দক্ষিণ ফ্রান্সের পিংক সিটি তুলুজে নির্মিত ফ্রান্সের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার ও প্যারিস একুশে উদযাপন পরিষদ ফ্রান্সের উদ্যোগে অস্থায়ী শহীদ মিনার বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
আনন্দের বিষয় হচ্ছে প্যারিসের
সেইন্ট ডেনিস মিউনিসিপালিটিতে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছেন স্থানীয় মেয়র। সাংবাদিক তাইজুল ফয়েজ সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে সেইন্ট ডেনিস মিউনিসিপালিটি প্যারিস এর মেয়র মাতিউ হানোতা বলেন-এই শহরে আমরা অনেক ভাষার লোক বাস করি,বাংলাদেশী কমিউনিটি একটি ভালো অবস্থানে রয়েছেন প্রতিবছর ভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে একত্রিত হন।সরুফ ছদিওল স্থায়ী শহীদ মিনারের প্রয়োজনীয়তা জানালে শহীদ মিনার নির্মাণের অনুপ্রাণিত হই। অস্থায়ী শহীদ মিনারে আমরা ফুল দিয়ে আসছি ২০২৪ এ আমরা স্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দেব।
এতে করে একে অন্যের ভাষা- সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পরবো। আমাদের মধ্যে একাত্মবোধ,উন্নত কমিউনিটি গঠনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করবে।
১৯৫২সালে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।এই দিবসের সকল প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের প্রতি সালাম ও শুভেচ্ছা রইল ।
প্রতি উত্তরে তাইজুল ফয়েজ বলেন ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলার জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব হলে ফ্রান্স সর্বপ্রথম সমর্থন জানায়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতে আন্তর্জাতিক সেমিনারের মূল প্রবন্ধ রচনা করেন ফ্রান্সের সাবেক মন্ত্রী বিশিষ্ট কলামিস্ট অন্দে মাররো। ফ্রান্স বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে।ফ্রান্সের দুটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক আরও সুদৃড় হলো।
ফ্রান্সের তুলুজ ও প্যারিসের
সেইন্ট ডেনিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের প্রধান সমন্বয়ক কাজী এনায়েত উল্লাহ ইনু বলেন আমি নিজেকে সুভাগ্যবান মনে করি ফ্রান্সের দুটি স্থায়ী শহীদ মিনারের সমন্বয়েকের দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি সকল প্রবাসী এতে অংশগ্রহণ করেছেন, আমাদের ইতিহাস – ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশ প্রেমের বীজ বপন করতে হলে ভাষা -সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
ফ্রান্সের তুলুজে স্থায়ী শহীদ মিনারের উদ্যোক্তা প্রবাসবন্ধু ফকরুল আকম সেলিম বলেন কাজটি এত সহজ ছিল না অনেক ঘাত প্রতিঘাত এড়িয়ে গিয়ে এটা বাস্তবায়ন করেছি।প্রথমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে হয়েছে এটা কি এবং কেন। পরে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ইহা বাস্তবায়ন করেছি একমাত্র দেশপ্রেম ও ভাষা সৈনিকদেরকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।
সেইন্ট ডেনিস মিউনিসিপালিটি প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোক্তা সরুফ ছদিওল বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল তাই প্যারিস এর সেনট ডেনিস ইনভার্সিটির পাশে আমরা স্থায়ী শহীদ মিনারের জায়গার চয়েস করেছি।
সকল প্রবাসী ভাই-বোনদের সহযোগিতায় ইহা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
একুশে উদযাপন পরিষদ প্যারিস এর আহ্বায়ক সুব্রত ভট্টাচার্য শুভ, সদস্য সচিব স্বপন আহমেদ বলেন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, যার স্বীকৃতি পরবর্তীকালে পথ দেখাল সারা পৃথিবীকে, হয়ে রইল এক অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা-বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা, ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে এ দিনটি পালিত হচ্ছে।
ফ্রান্সের প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশীর বসবাস বেশিরভাগ বাংলা ভাষাভাষী মানুষ প্যারিসে বসবাস করেন তাই তারা প্যারিসের
সেইন্ট ডেনিস মিউনিসিপালিটিতে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের অনুমোদন পাওয়ায় অত্যন্ত আনন্দিত তারা মনে করেন প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে শহীদ মিনার নির্মাণের মাধ্যমে বাংল, সাহিত্য – সংস্কৃতি চর্চার কোন বিকল্প নেই।