যুক্তরাজ্য সফরে লেখক-প্রকাশক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল

প্রকাশিত: ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২২ | আপডেট: ৪:৪৩:পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২২

 

ঐতিহ্যসন্ধানী লেখক, প্রকাশক ও সংগঠক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল একমাসের জন্য যুক্তরাজ্য সফরে এসেছেন। গত ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি যুক্তরাজ্যে পৌঁছান। জানা গেছে, তিনি যুক্তরাজ্য সফর শেষ করে সৌদি আরবে উমরাহ করে দেশে ফিরবেন। একমাস অবস্থানকালে তিনি যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে কবি সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করবেন।তিনি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের নালিউরি গ্রামের বাসিন্দা।

বায়েজীদ মাহমুদ ফয়স বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা, নিরলস কর্মনিষ্ঠা, মননী চিন্তাশক্তির বৈভব দিয়ে তিনি সাহিত্য মহলে সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। মূল্যবোধ এবং ঐহ্যিক চিন্তা-চেতনাকে তিনি লালন করেন স্বপ্রণোদনায়। অনন্য প্রতিভাধর বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল মৌলিক গ্রন্থ রচনা, সম্পাদনা ও প্রকাশনায় স্বতন্ত্র অবস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন

তিনি একাধারে একজন লেখক, গবেষক, প্রকাশক, সংগঠক এবং সাংবাদিক। তিনি একসময় সার্বক্ষণিকভাবে সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি মৌলিক গ্রন্থ রচনা, সম্পাদনা এবং প্রকাশনার মাধ্যমে বোদ্ধা মহলের অভিবাদন এবং শুভেচ্ছা কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন। এ পর্যন্ত তাঁর সাতটি মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত মৌলিক গ্রন্থগুলো হচ্ছে- মানুষের অনন্ত জীবন (২০১০), শিলচর ভ্রমণের আনন্দস্মৃতি (২০১৩), সিয়াম সাধনার ফজিলত (২০১৩) মুসলিম জীবনে বিয়ে ও দাম্পত্য (২০১৪), পার্থিবজীবনে লোভের পরিণতি (২০১৪), মনের মুকুরে দাগকাটা মুখ (২০১৮), বাংলাসাহিত্যে সিলেটিদের গৌরবগাথা (২০১৯) ও সফলতার থ্রি ডাইমেনশন (২০২০)। এই গ্রন্থগুলো দেশে-বিদেশে পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে।

ঐতিহ্যে ধাবমান কর্মবীর বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল সম্পাদনার ক্ষেত্রেও স্বকীয়তার ছাপ রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সম্পাদনা করেছেন বাংলাসাহিত্যের প্রাচীন উপন্যাস আর্জুমন্দ আলী রচিত ‘প্রেমদর্পণ’ (২০০৮), আবদুল মালিক চৌধুরীর ‘পরদেশী’ (২০০৮) ও নূতন ইমাম (২০১১), স্মারকগ্রন্থ সময়ের আলোয় হারূণ আকবর (২০১৩)। এছাড়াও তিনি অনুবাদের ক্ষেত্রেও মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা এবং সৃজনশীলতার বলয় সৃষ্টি করেছেন। প্রত্যেক মুসলিমের যেসব বিষয় জানা ওয়াজিব (২০১১), আপনার ঈমান কি আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য (২০১১), হাদিস বর্ণনাকারী একশত সাহাবী এবং বিখ্যাত গ্রন্থসমূহ (২০১১), সিয়াম সাধনার ফজিলত (২০১৩), কুরআন সুন্নাহর আলোকে আন্তরিক তওবা (২০১৩), মুসলিম বিয়ে ও দাম্পত্য (২০১৪)-এই গ্রন্থগুলো পাঠকসমাজের হৃদয় আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে তিনি সিলেটের সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘পাণ্ডুলিপি প্রকাশন’-এর স্বত্বাধিকারী হিসেবে তাঁর কর্মপ্রভা এবং দক্ষতার ছাপ রেখে চলেছেন। উল্লেখ্য, ২০০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত পাণ্ডুলিপি প্রকাশন লেখক, প্রকাশক ও সংগঠক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল-এর সৃজনশীল নিরলস প্রচেষ্ঠায় প্রকাশনা জগতে দু্ই হাজারেরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশের মাইলফলক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এছাড়া যৌথ সম্পাদনার মধ্যে তিনি ‘চৌধুরী গোলাম আকবর অন্যের চোখে অনন্য (২০১৪) সম্পাদনায় অনন্য কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। সাহিত্যের ছোটকাগজ পাণ্ডুলিপি এককভাবে সম্পাদনা করেও তিনি মননশীল ব্যক্তিত্বের প্রশংসা করেছেন।

বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সলের কর্মপরিধি সুদূরপ্রসারী চিন্তার পরিচায়ক। তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত আছেন। তিনি গোলাপগঞ্জ ফাউন্ডেশনের সভাপতি, ইন্দো-বাংলা মৈত্রীর বাংলাদেশ শাখার সম্পাদক, হলিসিটি ট্যুরিস্ট কাবের সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের জীবনসদস্য। তিনি একসময় গান ও নাট্যচর্চা করতেন। তার প্রকাশিত গানের অ্যালবাম আলোর পথে ডাক দিয়ে যায় (যৌথ; ১৯৯৯), তিনি সিলেটের পাণ্ডুলিপি প্রকাশনের পরিচালক। সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে সংগঠক হিসেবে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘রোটার‌্যাক্ট কাব অব সিলেট হলিল্যান্ড’ তাকে ২০০৯-২০১০ রোটাবর্ষের অভিষেক অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রদান করে। এছাড়া তিনি আসাম বিশ্ববিদ্যালয় শিলচরের আমন্ত্রণে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে তিনদিন ব্যাপী ‘স্বাধীনতাপূর্ব শ্রীহট্টের পাণ্ডুলিপি ও পাণ্ডুলিপি বিশারদগণ-গুরুত্ব ও সার্বিকতা’ শীর্ষক সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে স্মারক সম্মাননা লাভ করেন। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র তাকে প্রকাশনা ও সম্পাদনায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা স্মারক প্রদান করে। ‘সাউথ আসাম মিডিয়া এসোসিয়েশন’ তার হাতে এ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। গত বছরই আসামের কাছাড় থেকে বাংলাদেশ মননশীল লেখক-প্রকাশক হিসেবে ‘হাজি এস ইউ লস্কর এডুকেশনাল ফাউন্ডেশন’ তাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করে। এসময় তিনি দেশ-বিদেশে প্রাজ্ঞব্যক্তিত্বের সাথে মতবিনিময়ের সুযোগ লাভ করেন। দেশ-বিদেশের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বের সাথে মতবিনিময় তার চিন্তাচেতনাকে আরো বেশি উদার ও মানবিক করে তুলেছে। আর এটাকে কেন্দ্র করেই তিনি তার যাপিত জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল এর আগেও ব্যক্তিগতভাবে সৌদি আরব এবং ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সফর করেন। এসময় তিনি দেশ বিদেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় করেন। নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখ তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি।