হেফাজত একা নয়, তাণ্ডবে বিএনপি-জামায়াতও জড়িত: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, |                          

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় হেফাজতে ইসলাম যে তাণ্ডব ঘটিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন শুধু হেফাজত একা নয়, হেফাজতের সাথে বিএনপি-জামায়াতও জড়িত।

আজ রবিবার সংসদের চলতি ১২তম অধিবেশনের সমাপনী দিবসে বক্তব্য দেওয়ার সময় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী হেফাজতের দেশব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞের কিছু ছবি দেখান সংসদে।

তিনি বলেন, এমন ধরনের কাজ নাই যা সেদিন তারা করেনি। সরকারি অফিস, ভূমি অফিস এমনকি কোরান শরীফ পুড়িয়ে দিয়েছে তারা। তারা কেন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে কোরান শরীফে আগুন দেয়?

প্রধানমন্ত্রী হেফাজতে ইসলামকে হুঁশিয়ার করে জাতীয় সংসদে বলেন, যে কোনো কিছু হলেই ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ বা আমাদের অফিস, বাসায় আগুন দেয়া হয়। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করি। আগুন নিয়ে খেলছে তারা। এক ঘরে আগুন লাগলে সেই আগুন তো অন্য ঘরেও চলে যেতে পারে। সেটা কি তাদের হিসাবে নেই?’

‘আজকে রেল স্টেশন থেকে শুরু করে ভূমি অফিস থেকে শুরু করে, ডিসি অফিস থেকে সব জায়গায় যে আগুন দিয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের মাদ্রাসা, বাড়িঘর সেগুলোতেও যদি আগুন লাগে তখন তারা কী করবে? জনগণ কি বসে বসে শুধু এসব সহ্য করবে তারা তো সহ্য করবে না,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘তবে হেফাজতের সবাই যে এই কর্মকাণ্ডে জড়িত তা কিন্তু নয়। এটিই কিন্তু বাস্তবতা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৬ মার্চ হেফাজত গুজব ছড়ালো, বায়তুল মোকাররমে মানুষ মেরে ফেলা হচ্ছে ইত্যাদি। ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতা চালানো হয়। হেফাজতের পক্ষে বিএনপির বিবৃতি দেশব্যাপী ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিক অংশ।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অনেক বিদেশি অতিথি এসেছে আমাদের দেশে, ব্রিটেনের রানী থেকে শুরু করে অনেকের শুভেচ্ছা বাণী পাচ্ছি, এতো বড় সম্মান পাচ্ছি, সেখানে কারা খুশি হতে পারলেন না?

প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেন, ‘২৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদির আসার কথা, তাকে আসতে দেয়া যাবে না। কেন?

আজকে হেফাজতে ইসলাম কর্মসূচি দেয়–তারা কি (ভারতের) দেওবন্দ এ যায় না শিক্ষা গ্রহণ করতে? তারা যদি এধরনের ঘটনা ঘটায়, তাহলে তারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে দেওবন্দে যাবে কীভাবে? সেটা কি তারা চিন্তা করেছে?

‘আমরা কওমি মাদ্রাসার সনদ দিচ্ছি, তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করছি। তাদের কাররিকুলাম ঠিক করে দিচ্ছি। তারা যেন দেশ-বিদেশে চাকরি পায় তারও ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তারপর তারা কেন এই তাণ্ডব ঘটালো?’ বলেন প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট কীভাবে সমর্থন দেয় সেটাই আমার প্রশ্ন। এখানে যে জ্বালাও পোড়াও করবে -সেটাও তারা পরামর্শ দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন পুলিশ কেন ধৈর্য দেখিয়েছে? আমরা ধৈর্য দেখিয়েছি কারণ আমরা এগুলো বিরত করার চেষ্টা করেছি। কারণ সংঘাতে সংঘাত বাড়ে। আমরা সেগুলা চাইনি।’

‘আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা সুন্দরভাবে উদযাপন করতে চেয়েছি। যারা এটা করেছে—দেশবাসী এটা দেখবে, বিচার করবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।