সিলেট ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৩২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২১
যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন বাংলাদেশের অন্তত ১০ জন রোগীর মাঝে শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তবে এই সংখ্যা আগামীকাল পরিবর্তিত হতে পারে।’
তিনি জানান, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে।
তিনি আরও জানান, এই উচ্চ সংক্রামক যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইনটি এখনো সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন না। গত এক সপ্তাহে দেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পেছনে করোনার এই নতুন স্ট্রেইনকে তিনি এখনই দায়ী করতে চান না।
অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ‘গবেষকরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন জিনোম সিকোয়েন্সিং বাড়ানোর জন্য, যাতে এ ধরনের রোগী আরও থাকলে তাদের শনাক্ত করা যায়। জিনোম সিকোয়েন্সিং একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং আমরা নিয়মিতভাবে এটা করে যাচ্ছি।’
তবে, এখন পর্যন্ত কতগুলো জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন হয়েছে, সে তথ্য তিনি দেননি।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মূল রূপ থেকে ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইনটি তৈরি হয়েছে। আমরা অন্যান্য স্ট্রেইনগুলো নিয়েও গবেষণা করছি।’
যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইন ‘এন৫০১ওয়াই’ বাংলাদেশে সর্বপ্রথম শনাক্ত হয় গত ৫ জানুয়ারি।
আক্রান্ত ব্যক্তি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছিলেন। ঢাকা ও সিলেটেও এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।
তবে ডেইলি স্টার গত ১০ মার্চ এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এটি গোপন রেখেছিলেন।
অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে হঠাৎ করে ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার পেছনের কারণগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইনটি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ সায়েদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমাদের এখানে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। কারণ এটা খুবই ব্যয়বহুল। দেশে যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইন কী পরিমাণে ছড়িয়েছে তা জানার জন্য আরও বেশি জিনোম সিকোয়েন্সিং করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করার জন্য সরকারকে জরুরিভাবে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে এবং যেসব গবেষণাগার এটি করতে পারে তাদের এই প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করতে হবে।’
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতিমালা মেনে চলার অনীহা এবং ‘টিকা নিলে আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই’ বলে যে প্রচলিত ভুল ধারণা, তার কারণেও ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে।
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, সংক্রমণের হার, হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের অবশ্যই জিনোম সিকোয়েন্সিং ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে হবে। তাহলেই কেবল আমরা বুঝতে পারব টিকা কতটা ভালো কাজ করছে।’
কিছুদিন ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কমতে থাকায় মানুষ যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। এখন সবাই বেশ গা-ছাড়াভাবে দেখছেন ভাইরাসটিকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, এসব কারণেই নতুন করে আবার সংক্রমণের হার বাড়ছে।
অধ্যাপক তাহমিনা দাবি করেন, ‘আমরা যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইন এবং সাম্প্রতিককালের বেড়ে যাওয়া সংক্রমণের হারের মাঝে কোনো যোগসূত্র খুঁজে পাইনি। বরং মানুষের খামখেয়ালি আচরণের কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৮৩টি দেশে যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, আগের রূপের চেয়ে যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইনটি ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি মারাত্মক হতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্য সরকার কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো এই রূপটি চিহ্নিত করার পর থেকে বেশিরভাগ করোনা রোগীই এই স্ট্রেইনে আক্রান্ত হয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, ভারতে তিন ধরনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২৪২ জন রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইনে আক্রান্ত।
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সরকারের বিজ্ঞানীরা অন্য সব স্ট্রেইনের তুলনায় যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইনটিকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন। এতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের এই নতুন স্ট্রেইন হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য স্ট্রেইনের তুলনায় এই স্ট্রেইনটি ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি দ্রুত সংক্রমিত করছে।
Chief Editor : Afroz Khan
Editor: Sunny Ahmed
Executive editor: Mohammed Taizul islam,
Message editor : Shahan Shah Ahmed
Call: +88 01995-019920
Office : Al Marjan Shoping Centre (3nd Floor), Zindabazar, Sylhet 3100
Email : info.Sylhetnewsworld@gmail.com
২০১০ সাল থেকে শুরু – সরকারি নিবন্ধনের আবেদনকৃত নিউজ পোর্টাল।