স্বেচ্ছাসেবকদের ভ্যাকসিনের ভুল ডোজ, তথ্য গোপন অক্সফোর্ডের

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, |                          

প্রায় দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবককে দেওয়া হয়েছিল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিনের ভুল ডোজ। শুধু তাই নয়, ভুলের কথা জানার পরও তা স্বীকার করা হয়নি। এর ফলে স্বেচ্ছাসেবকদের ক্ষতির আশঙ্কা কতটুকু, তাও জানায়নি অক্সফোর্ড। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

খবরে বলা হয়েছে, ভুলের কথা স্বীকার করার বদলে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের বিভিন্ন ডোজে ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করে তা শেখার সুযোগ হিসেবে ৪ জুন একটি চিঠিতে ডোজ নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়েছিল। এই চিঠি প্রধান তদন্তকারী, অক্সফোর্ডের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু জে পোলার্ডের স্বাক্ষরিত ছিল।

২৪ ডিসেম্বর অক্সফোর্ড গবেষকরা পরিমাপের ভুলের কারণে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় অর্ধেক ডোজ দিয়েছিলেন। পোলার্ড চিঠিতে কোনও ত্রুটি স্বীকার করেননি। এছাড়া এটিও প্রকাশ করা হয়নি যে গবেষকরা বিষয়টি ব্রিটিশ মেডিক্যাল নিয়ন্ত্রকদের কাছে জানিয়েছিলেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্যের জন্য কোনও ঝুঁকি ছিল এমন কোনও কথা তখন বলা হয়নি।

এই ব্রিটিশ ভ্যাকসিন বর্তমানে ব্রিটেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। মহামারির বিরুদ্ধে স্বল্প ব্যয়ের অস্ত্র হিসেবে এটি বিবেচিত হয়েছে। ফ্রিডম অফ ইনফরমেশনের অনুরোধের মাধ্যমে এই তথ্য সামনে আসে। বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে তথ্যের অভাবের কারণে যাচাই করা হয়। তাতেই উঠে এসেছে ডোজ সম্পর্কিত এ অভিযোগ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি ইঙ্গিত দেয় যে, গবেষকরা পরীক্ষার স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সৎ হতে পারেননি। অথচ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোতে স্বেচ্ছাসেবকদের যে কোনও পরিবর্তন সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত করার কথা।

নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি গ্রসম্যান স্কুল অব মেডিসিনের মেডিক্যাল এথিক্স বিভাগের প্রধান আর্থার এল ক্যাপলান বলেন, তাদের (স্বেচ্ছাসেবকদের) যে বিষয়ে জানা প্রয়োজন ছিল তা তারা জানতেই পারেনি। কী হচ্ছে এই প্রসঙ্গে তারা শুধু জেনেছে আরও গবেষণার কথা। কিন্তু এর যৌক্তিকতা সম্পর্কে তারা মোটেই পরিষ্কার ছিল না।

তবে ভুল ডোজ দেওয়া নিয়ে এই বিতর্কে জল ঢেলেছে অক্সফোর্ড। এই ভুলকে সামান্য ভুল বলে উল্লেখ করেছে তারা। অক্সফোর্ডের মুখপাত্র স্টিভ প্রিচার্ড বলেছেন, অর্ধেক ডোজ নেওয়া গ্রুপটি অপরিকল্পিত ছিল। তবে আমরা আগেই জানতাম যে ডোজ পরিমাপে একটু পার্থক্য ছিল। ডোজ দেওয়ার আগে এবং ডোজটি সংশোধন করার সময় নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছি।

প্রিচার্ড আরও বলেন, ‘আমরা বলিনি যে ডোজের কোনও ত্রুটি ছিল’। তবে অ্যাস্ট্রাজেনিকার এক মুখপাত্র এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।