বিএনপির ২৫ কমিটির নেতৃত্বে নেই হাফিজ-শওকত

প্রকাশিত: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০২০ | আপডেট: ৫:৫৫:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০২০

স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দলটি ২৫টি কমিটি গঠন করেছে। এসব কমিটির নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের রাখা হলেও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখা হয়নি দুই ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদকে। তাদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে হাফিজউদ্দিন ও শওকত মাহমুদকে সম্প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তারা শোকজের জবাবও দিয়েছেন। হাফিজ এ নিয়ে শনিবার যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাতে অভিযোগ ছিল– বিএনপিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তাদের কোণঠাসা করে রাখতে তৎপর একটি অসাধু চক্র।

হাফিজ ও শওকত মাহমুদের শোকজের জবাবের বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত এখনও জানা যায়নি। আজ যে ২৫টি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলোর কোনোটাতেই আহ্বায়ক কিংবা সদস্যসচিব করা হয়নি তাদের।

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির মূল কমিটিতে আছেন। মূল কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সদস্যসচিব চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। হাফিজউদ্দিন ওই কমিটির ১৫ নম্বর সদস্য। আর শওকত মাহমুদ ৩৫ নম্বর সদস্য।

শায়রুল আরও জানান, মূল কমিটি ছাড়াও এ দুজনকে বিষয়ভিত্তিক ও ডিভিশনাল কমিটিতে রাখা হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় কমিটির দুই নম্বর সদস্য হাফিজউদ্দিন। ওই কমিটির আহ্বায়ক সেলিমা রহমান, এক নম্বর সদস্য ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার।

অন্যদিকে মিডিয়াবিষয়ক কমিটিতে আছেন শওকত মাহমুদ। এই কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ, সদস্যসচিব শ্যামা রহমান আর এক নম্বর সদস্য শওকত মাহমুদ।

মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ২৫টি কমিটিতে থাকা নেতাদের নাম ঘোষণা করেন। বিষয়ভিত্তিক ১৫টি কমিটি এবং ১০টি বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে।

কমিটি ঘোষণার আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দল হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনে তাদের দায়িত্ব বেশি। সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন পর্যায়ক্রমে বহির্বিশ্বেও কমিটি গঠন করা হবে।

বিএনপি–ঘোষিত কমিটির মধ্যে আইনের শাসন ও মানবাধিকার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদকে। এ কমিটির সদস্যসচিবরা হলেন– দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন ও দলের মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) শাহজাহান ওমরকে। এ কমিটির সদস্যসচিব দলের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদিন।

প্রচার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে। কমিটির সদস্যসচিব দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

সেমিনার–সিম্পোজিয়াম কমিটির আহ্বায়ক দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। সদস্যসচিব চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।

প্রকাশনা কমিটির আহ্বায়ক দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। সদস্যসচিব প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম।

আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব বাদে প্রতিটি কমিটিতে একাধিক নেতাকে রাখা হয়েছে। কমিটি ঘোষণার সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যসচিব ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।