বিএনপি নেতারা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাবেন, নাকি নিচ দিয়ে?’

প্রকাশিত: ৫:২৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০২০ | আপডেট: ৫:২৯:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০২০

পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতিতে বিএনপি আশাহত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সেতু নির্মাণের শুরুতে বিএনপি চেয়ারপারসন জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ এ সেতু করতে পারবে না। আর করতে পারলেও কেউ এ সেতু দিয়ে যাবেন না। তাই এখন জনগণের প্রশ্ন, বিএনপির নেতারা কী সেতুর ওপর দিয়ে যাবেন, নাকি নিচ দিয়ে?’

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) তথ্যমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘যদিও মানছি দূরত্ব, তবুও আছি সংযুক্ত’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জনগণের স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রায় সম্পন্ন হওয়ায় দেশের মানুষ উল্লাসিত। কিন্তু বিএনপিসহ যেসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতু নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সভা-সেমিনারে নানা অভিযোগ তুলেছিল, তারা কী এখন আশাহত হয়েছে, নাকি লজ্জা পেয়েছে—জনগণ এমন প্রশ্ন তুলছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার যখন পদ্মা সেতুর কাজে হাত দেয়, তখন এক টাকা ছাড় না দিয়েও বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল। তখন বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিএনপিসহ দেশের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিবর্গ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিভিন্ন সভা-সিম্পোজিয়ামে পদ্মা সেতু নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ করেছিল। তাদের পক্ষে নেতিবাচক যা যা করা সম্ভব তখন তা করেছিল। কিন্তু পরে কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয় যে, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ মিথ্যা। বিশ্বব্যাংক পরবর্তী সময়ে প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। তখনও বিএনপিসহ এসব ব্যক্তি-সংস্থার মুখ বন্ধ ছিল না। তারা সবসময়ই এ প্রকল্প নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর পদ্মার দুইপাড় সংযুক্ত হওয়ার পর তাদের আর কোনও বক্তব্য শোনা যাচ্ছে না। তাই জনগণের এখন প্রশ্ন, বিএনপিসহ এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কি লজ্জায় মুখ লুকিয়েছে, নাকি আশাহত হয়েছে?’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের বা সরকারের কোনও কাজে ভুল পেলে বিদেশিরা যে সুরে কথা বলেন, বিএনপিসহ এসব সংস্থা-ব্যক্তি তার চেয়ে ১০ গুণ সুরে আওয়াজ তোলে। দেশের এমন সাফল্যে যেখানে সবাই শেখ হাসিনা ও তার দলকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন, সেখানে তাদের এমন নীরবতাই প্রমাণ করে তারা আসলে আশাহত হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে বর্তমানে আইটি ও আইসিটি-নির্ভর চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলছে।বাংলাদেশ আগের তিনটি শিল্প বিপ্লবে অনেক পিছিয়ে থাকলেও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে তাল রেখেই পথ চলছে। ভারত যেখানে ২০১৬ সালে ডিজিটাল ভারতের কিংবা ইউকে যেখানে ২০১৮ সালে ডিজিটাল ইউকের ঘোষণা দিয়েছিল, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালেই ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি তার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সত্যিই ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন। দেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি, ফেসবুক ইউজার ৪.৫ কোটি। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছরে এর সংখ্যা দ্বিগুণে উন্নীত করা সরকারে লক্ষ্য। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে যেখানে ২০০৮ সালে রফতানি আয় ছিল ২৬ মিলিয়ন ডলার, এখন তা হয়েছে এক বিলিয়ন বা ১০০০ মিলিয়ন ডলার। ডিজিটাল লেনদেন বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উদাহরণ। করোনা মহামারিতে যেখানে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে ছিল, সেখানে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়ায় আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা সচল ছিল। ফলে যেখানে করোনাকালে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ছিল, সেখানে বিশ্বের যে’কটি দেশ ধণাত্মক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছিল, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম।’