যেভাবে ভারতে নিয়ে নারীদের পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করত ‘টিকটক হৃদয়’

প্রকাশিত: ৫:৩২ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২১ | আপডেট: ৫:৩২:অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২১

দুই বছর ধরে নিখোঁজ এক বাংলাদেশি তরুণীকে ভারতে কেরালায় বীভৎস কায়দায় অমানসিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু অপরাধীর সঙ্গে মিলে মানবপাচারের আন্তর্জাতিক চক্র গড়ে তুলেছিলেন। এই চক্রটির নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মো. শহিদুল্লাহ এসব তথ্য জানান।

ডিসি শহিদুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মূলত পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে ভারতে পাচার করা হয়। ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু হোটেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এই চক্রটি। হোটেলগুলোতে চাহিদা মাফিক বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের নিয়মিতভাবে সরবরাহ করা হয় বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি জানান, এই চক্রের সদস্যরা স্কুল-কলেজের বখে যাওয়া ছেলেমেয়েদের টার্গেট করত। বিশেষ করে টিকটক গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করে তারা পাচার কাজে সহযোগিতা করছিল।আমরা জানতে পেরেছি, ভারতে গ্রেফতার টিকটক হৃদয় টিকটকের একটি গ্রুপের এডমিন। সেই গ্রুপের মাধ্যমে গত বছরের শেষের দিকে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার একটি রিসোর্টে ৭০০/৮০০ তরুণ-তরুণী পুল পার্টিতে অংশ নেয়। মূলত টিকটক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে তরুণ-তরুণীরা পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত হয়ে একটি ফেসবুক গ্রুপে সংযুক্ত হয়। যে ফেসবুক গ্রুপটির মূল পৃষ্ঠপোষক এই আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই গ্রুপে সুনির্দিষ্ট কিছু ছেলে গ্রুপের নারী সদস্যদের ভারতের বিভিন্ন মার্কেট, সুপার শপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির অফার দিয়ে প্রলোভনে ফেলে ভারতে পাচার করছিল। চক্রটির মূল আস্তানা হচ্ছে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায়।

তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা পাচার করা বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুরায় নিয়ে যাওয়ার পর কৌশলে নেশাজাতীয় বা মাদকদ্রব্য সেবন করিয়ে বা জোর করে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করত। এরপর ওই তাদের হুমকি দেওয়া হতো যে, তারা অবাধ্য হলে বা পালানোর চেষ্টা করলে এই ভিডিও তাদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

ডিসি শহিদুল্লাহ বলেন, ভারতে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা অবৈধভাবে সেখানে গেছে। তাদের কোনো পাসপোর্ট, ভিসা নেই। মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি মামলায় এনসিবির মাধ্যমে দ্রুততর সময়ে তাদের আমরা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।