জীবন নায়ের হাল

প্রকাশিত: ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ, |                          

প্রশংসিতের প্রশংসা করার বিস্তর কমেন্টস ইতিমধ্যেই পড়ে গেছে সৃজন পালের নতুন চিত্রিত দৃশ্যকাব্য “জীবন নায়ের হাল” গল্পে। ছোট্ট একটা রিভিউ দিলাম। আশাকরি এরপর গল্পটি অনেকেই আবার দেখবেন তবে ভিন্ন দৃষ্টিতে।

রিভিউ —-

গল্পঃ জীবন নায়ের হাল
_______________________

১. ১-৪ সেকেন্ডে দেখানো প্রথম দৃশ্যটি অসাধারণ। মাথার উপর তীর্যক সূর্য এবং দূরে নৌকা যাবার কুইক এনিমেটেড মুড ; এক কথায় কালার এডযাস্ট সহ শুরুটা অসাধারণ হয়ে পরের গল্প দেখা ও শোনার জন্য ভিউয়ারকে আটকে দিলো।

২. ৯/১০ সেকেন্ডের সময় পানির খুব পরিচিত কলকল ধ্বনির আছড়ে পড়া ছন্দ, যা গল্প শুরুর আগেই গল্পের মিষ্টতা এনে দিয়েছে।

৩. চরের ভেতর দিয়ে হেটে যাওয়া, পাখির সাথে নিজেকে তুলনা, কাটা পড়া হাত দেখাতে গিয়ে গল্পের নায়কের মুখটা প্রথম ক্যামেরায় ধারণ, ঘাসের ভেতর ফেলে রাখা মোবাইলের স্ক্রিনে রিফ্লেক্ট হওয়া গল্পের নায়কের নিজের ছায়াদৃশ্য ছাড়াও ছোটবেলার দৃশ্যটি ফেড কালারে উপস্থাপন, একাকীত্ব বোঝাতে প্রতি কয়েক সেকেন্ড করে করে বিশেষ দৃশ্যগুলো সহ সব যেন ধারালো হিরকে কাটা কাঁচের খসে পড়া ক্ষণ।

এছাড়াও সব দৃশ্যের মাঝে হঠাৎ করেই ক্যারাম খেলাটা ছিল জীবন-ছন্দের যুতসই ধারণ।

৪. ১:৪৮ সেকেন্ডে গিয়ে “বলো না আমায়” বেকগ্রাউন্ড গানের অসাধারণ কম্বিনেশন যা সত্যজিৎ রায়ের হাতে গড়া কোন দৃশ্যকে মনে করিয়ে দেয়।

৫. ২:১৯ সেকেন্ডেও মনে হয়েছিল যে জীবন-গল্পটি করুন কোন পথের দিকে গড়াচ্ছে কিন্তু ২:২২ সেকেন্ডই তা উঠে দাড়ালো। এ যেন আরেক গল্পের শুরু নিয়ে চিত্রিত শিল্পীর অসাধারণ স্ক্রিপ্ট। রাইটার কলমের যাদু দেখাতে সফল হয়েছেন এখানে।

৬. ২:৪২ সেকেন্ড হতে জীবনের নতুন করে হাল ধরা গল্পের ছন্দ শুরু হয়। বেকগ্রাউন্ড মিউজিকের সঠিক ব্যবহারই ভিউয়ারকে তার নিজেদের চোখে চিক দেওয়া আনন্দ এনে দিলো কারণ গল্পটি এবার ভরসার গল্প হয়ে ভেসে যাচ্ছে।

৭. কাটা হাতে বৈঠা বাওয়া, গায়ের লোমের রং পরিবর্তনের কারণ, এক হাতে একটির পর একটি কর্মদক্ষতা দেখানো যেন জীবন যুদ্ধের সাধারণ ঘটনার অসাধারণ দৃশ্যকাব্য। যা ক্যামেরা ও স্ক্রিপ্ট রাইটারের দক্ষতা দেখিয়ে চলেছে বারবার।

৮. ৩:৫০ সেকেন্ডে বলা “আল্লা আমারে মনে জোর দেছে” বাক্যটিতে যে পুরো গল্পের মূল ম্যাসেজ রেখে গেলো তা সবার জানা হয়ে যায়।

৯. ৩:৫৪ সেকেন্ডে গল্পের নায়কের পেছন হতে গোধূলির শেষ দৃশ্য যেন চোখে লেগে থাকবে চিরকাল।

১০. ৪:০৫ সেকেন্ডে গল্পের নায়কের হাসির সাথে বলা “আমি যেন হাল না ছাড়ি” এই কথাটি দর্শকের মনের ভিতরে জীবনকে টিকিয়ে রাখবার অমেয় স্বপ্ন রচনা করে দেয়।

১১. আর সব শেষে ভোকালে শুভঙ্কর পালের যাদু ভরা আঞ্চলিক কথার মধুময় টান শুনে দেশের ফিরে এমন একটি কাজ করার স্বাধ জেগে উঠলো আমার।

সব মিলে “সৃজন পাল” তার নামের মতই সৃজনশীল কাজের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে “জীবন নায়ের হাল” ।

আশাকরি এবার দেখার মনযোগে ভিন্নতা আসবে।

বিঃদ্রঃ যুগল ভাইয়ের জন্য বিশেষ গিফট থাকবে।