![সহজ হলো স্পেনের অভিবাসী আইন, সুবিধা পাবে বাংলাদেশিরা](https://sylhetnewsworld.com/wp-content/uploads/2021/04/received_467565554567240.jpeg)
সিদ্দিকুর রাহমান মাদ্রিদ প্রতিনিধিঃ
ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ স্পেন বরাবরই অ’ভিবাসীদের কাছে পছন্দের একটি দেশ। বিশেষ করে সহ’জ শর্তে বৈধ হওয়ার সুযোগ থাকায় দেশটিতে অ’ভিবাসীরা ভিড় জমান।
অ’ভিবাসীদের স্বাধীনভাবে স্পেনে প্রবেশের অনুমতি দান করার ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর মধ্যে স্পেন প্রথম। বর্তমানে স্পেনে অ’ভিবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব আইন আরও সহ’জ হলো।
টানা দুই বছর স্পেনে বসবাসের ডকুমেন্টেসহ ছয় মাস বৈধভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে মিলবে এই বৈধতা। সম্প্রতি স্পেনের একটি আ’দালত নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২৫ মা’র্চ স্পেনের গ্রানাডার একটি আ’দালত একজন অ’ভিবাসী মহিলার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেন।
ইউরোপের একমাত্র দেশ স্পেন যেখানে ইউরোপের বাইরের তৃতীয় দেশের ক্ষেত্রে মাইগ্রেশন প্রক্রিয়াটা খুবই সহ’জ এবং নমনীয় যে কেউই খুব সহ’জেই এখানে থাকার ইচ্ছা পোষণ করলে ন্যূনতম শর্তে বসবাস করার সুযোগ পান।এখানে বিদেশিরা ১০ বছর নিয়মিত থাকার পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন এবং তিন বছর নিয়মিত থাকার পর যদি তাদের সন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে সে স্প্যানিশ নাগরিকত্ব পায়।
এ আইন অনুযায়ী এখন অনিয়মিতভাবে বসবাসকারী পিতামাতার সন্তান জন্ম হলেও সে স্প্যানিশ নাগরিকত্ব পাবে বা দুজনের মধ্যে একজন স্পেনে নিয়মিতভাবে বসবাস করলে তাদের সন্তানও স্প্যানিশ নাগরিকত্ব পাবে।নতুন আইন অনুযায়ী একসঙ্গে টানা দুই বছর স্পেনে বসবাসের ডকুমেন্টের সঙ্গে ৬ মাস বৈধভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে বৈধ হওয়া যাবে। এজন্য কোনো কোম্পানির কিংবা শপের অনুমতি বা কন্ট্রাক পেপারও লাগবে না; আগে যা প্রযোজ্য ছিল।
আবেদনের নতুন নিয়ম: স্পেনে দুই বছর থেকে বসবাস করছেন এবং বিভিন্ন এসাইলাম নিয়ে কাজের পারমিশন পেয়ে কমপক্ষে ছয় মাস কাজ করেছেন এবং তার বি’রুদ্ধে কোনো ক্রা’ইমে জড়িত থাকার প্রমাণ যদি না থাকে- শুধুমাত্র তারাই এ আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া যাদের পূর্বে স্পেনের রেসিডেন্স কার্ড ছিল কোনো কারণে তাদের কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে- এরকম যারা আছেন তাদের কর্মসংস্থান রেকর্ড প্রতিবেদন (বিদালাবোরাল) ছয় মাসের যদি থাকে তারা এ সুবিধার আওতায় পড়বেন।
এজন্য কোনো কাজের কন্ট্রাকের প্রয়োজন হবে না বা আরাইগো সার্টিফিকে’টের প্রয়োজন হবে না। শুধু বিদালাবেরালের কপি এবং বাংলাদেশের পু’লিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট হলেই স্পেনে বৈধতা পেতে পারে।
এছাড়া বৈবাহিক সূত্রে স্পেনের নাগরিকত্ব পেতে হলে পূর্বে তিন বছর সময় লাগত। কিন্তু বর্তমান আইনে তা দুই বছর করা হয়েছে এবং আরও বিভিন্ন অনুচ্ছেদে সময় উপযোগী কিছু সংশোধন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মুতাসিমুল ইস’লাম আমাদের এ প্রতিবেদক কে বলেন, নতুন এ আইনে বাংলাদেশিদের বৈধ হওয়ার সুযোগ তৈরি হলে বাংলাদেশের পু’লিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
এ ব্যাপারে স্পেনের মানবাধিকার সংগঠন ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মো. ফজলে এলাহী জানান, বিভিন্ন এসাইলাম নিয়ে স্পেনে প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি অ’ভিবাসী রয়েছেন। এদের অধিকাংশই এর আওতায় বৈধ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি এজন্য কাউকে কোনো দালাল কিংবা উকিলের শরণাপন্ন হয়ে সর্বস্বান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।
ইউরোপের অন্যান্য দেশ যেমন- ইতালি, গ্রিস, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে যেহেতু নাগরিকত্ব পাওয়াটা অনেক জটিল এবং অনেক দীর্ঘ প্রক্রিয়া- কাজেই যারা ইউরোপে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তারা সাধারণত স্পেনকেই বেছে নেন। স্প্যানিশ পাসপোর্টধারী বাঙ্গালিদের সংখ্যা অনেক, যারা এখন পরিবার নিয়ে যু’ক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন। তাছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য করাটাও এখানে অনেক সহ’জ বিধায় বাংলাদেশিরা এখানে সহ’জেই নাগরিকত্ব পাওয়ার আগপর্যন্ত থাকতে পারেন; আর এ কারণেই মূলত এখানে বাংলাদেশিরা অ’ভিবাসী হন।