কারাগারে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করতে আদেশ মঙ্গলবার

প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, |                          

প্রকৃত আসামির পরিবর্তে অন্যজনের কারাগারে যাওয়া বা কারাগার থেকে পালানো ঠেকাতে এবং থানায় পুলিশ রেকর্ডে প্রকৃত আসামির ছবি যুক্ত করতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করার নির্দেশনা চেয়ে আবেদনের ওপর মঙ্গলবার আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেবেন।

রোববার শুনানি শেষে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, এই পদ্ধতি ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য সহায়ক। এটা চালু করলে রাষ্ট্রের ক্ষতির কোন সুযোগ নেই।

নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় করা এক মামলার আসামি অন্যের নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে কারাগার থেকে পালানোর ঘটনায় করা এক রিট মামলায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর এই আবেদন করা হয় হাইকোর্টে।

আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এর আগে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গতবছর ১০ মার্চ এক আদেশে ঢাকা মূখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার কার্যকারিতা স্থগিত করেন। এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দেড়বছর পর তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জমা দেয়।

পিবিআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জহির উদ্দিনকে খিলগাঁও থানার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানার আসামি হিসেবে চিহ্নিত করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জহির উদ্দিন প্রকৃতপক্ষে গ্রফতারি পরোয়ানাধারী ব্যক্তি নয়। প্রকৃত আসামি মোদাচ্ছের আনছারী ওরফে মোহাদ্দেস। এই প্রতিবেদন দেখার পর আদালত কি করণীয় সেবিষয়ে আইনজীবীর কাছে একটি লিখিত বক্তব্য জানতে চান। এরপর আইনজীবী শিশির মনির হাইকোর্টে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন। তাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব করেন। রোববার তার শুনানি হয়।

রাজধানীর খিলগাঁও থানায় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের শাহজাদপুর গ্রামের আহসান উল্লাহর ছেলে মোদাচ্ছের আনছারীকে গ্রেফতার করে। আটক হবার পর মোদাচ্ছের তার নাম-ঠিকানা গোপন করে নিজেকে নোয়াখালীর বসুরহাট পেৌরসভাধীন আজগর আলী মোল্লা বাড়ী মসজিদ রোড এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নামে পরিচয় দেয়। এরপর ওই বছরের ৩১ অক্টোবর মোদাচ্ছের জামিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে পুলিশ তদন্ত শেষে জহির উদ্দিনসহ অপরাপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর জহিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এ অবস্থায় জহির উদ্দিন যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়ায় সংশি্লষ্ট কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মূল আসামী মোদাচ্ছের আনছারীর ছবি এবং শারীরিক বর্ণনাসহ বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে জহির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন।