পাগলিও মা হলো, কিন্তু বাবা হলো না কেউ!

প্রকাশিত: ৫:১১ অপরাহ্ণ, |                          

‘পাগলিটাও মা হয়েছে, তবে বাবা হয়নি কেউ; পাগলি বলে যায়নি ছেড়ে প্রসব ব্যথার ঢেউ’ – প্রচলিত একটি কবিতার কয়েকটি চরণের করুণ বাস্তবায়ন হয়েছে নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামে।

নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোববার (১৫ আগস্ট) কন্যা সন্তানের মা হলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামের মৃত মুনির হোসেনের মেয়ে। তার মা একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে তিনিই বড়। ছোট বোন রোজিনার বিয়ে হয়েছে। এক ভাই আব্দুল্লাহ মাত্র ১০ বছর বয়স। ৩ বছর ঘরে শিকলে বাঁধা ছিল ওই ভারসাম্যহীন নারী। প্রায় ১১ মাস পূর্বে শিকল খুলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে প্রায় ৩ মাস ধরে পার্শ্ববর্তী উপজেলার আটপাড়া বাজারের অলিগলিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন।

আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারসাম্যহীন নারীর পরিচয় অনুসন্ধান করে বিষয়টি মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেন। মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই নারীকে উদ্ধার করে গোবিন্দশ্রী তার গ্রামের বাড়ি পাঠায় এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। রোববার (১৫ আগস্ট) মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই নারীর কোলজুড়ে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান।

মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাঈম আহমেদ রিয়াদ আরটিভি নিউজকে জানান, রোববার ভারসাম্যহীন নারীর কন্যা সন্তান জন্ম হয়েছে। মা ও মেয়ে ভালো আছে।

মদন উপজেলার নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ আরটিভি নিউজকে জানান, রোববার ভারসাম্যহীন ওই নারীর কন্যা সন্তান হয়েছে। সন্তানকে দত্তক নিতে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আলাল উদ্দিন আরটিভি নিউজকে জানান, বাচ্চাটিকে কেউ দত্তক নিতে আগ্রহী হলে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বন করে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

নেত্রকোনা জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী মনোরঞ্জন সরকার আরটিভি নিউজকে বলেন, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে আজ মানসিক ভারসাম্যহীন নারীরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সমাজের এসব বখাটেদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার। যাতে সমাজে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।