সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিলায় আগুন

প্রকাশিত: ১:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২৫

সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিলায় আগুন

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাসের গাজী-কালু টিলায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা গিয়ে আগুন নেভান। তবে কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে তা জানা যায়নি।

টিলায় দায়িত্বরত নিরাপত্তকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা জানান, শনিবার বেলা একটার দিকে গাজী–কালু টিলায় দায়িত্বরত দুজন নিরাপত্তাকর্মী হঠাৎ টিলায় আগুন দেখতে পান। এ সময় আরও কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীসহ ১৫ থেকে ১৬ জন লোক গিয়ে গাছের ডাল-পাতা দিয়ে আগুন নেভান। তবে কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে, তা জানা যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমের কারণে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। টিলায় বিভিন্ন ধরনের গাছের চারা ও আগাছা পুড়েছে। সমতল ভূমিসংলগ্ন টিলার পাদদেশ থেকে আনুমানিক প্রায় ২০ ফুট উঁচুতে আগুনের বিস্তার ঘটেছে। নিরাপত্তাকর্মীদের তত্ত্বাবধায়ক বাদশা মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, টিলার প্রায় ২০ শতক জায়গা আগুনে পুড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসার আগে নিরাপত্তাকর্মীরা আগুন নেভাতে সক্ষম হন। আগুন কীভাবে লেগেছে বা কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

বারবার টিলায় অগ্নিকাণ্ড

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিলায় অগ্নিকাণ্ড শুধু এবারই প্রথম নয়। গত কয়েক বছরে সাত থেকে আটবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খোঁজ নিয়ে যায়, ২০২১ সালের ২৫ মার্চ শাহপরান হলসংলগ্ন টিলায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ২০২২ সালে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন বঙ্গবন্ধু হলসংগ্ন ও গাজী–কালুর টিলার চারটি স্থানে আগুন লাাগিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি সৈয়দ মুজতবা আলী হল–সংলগ্ন টিলায় আগুন লাগে।

এ ঘটনার এক মাস পর ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একই টিলায় আবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাজী–কালুর সংলগ্ন টিলায়ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে এসব আগুন লাগানোর ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা জানা যায়নি। এসব অগ্নিকাণ্ডে টিলার ফলদ, বনজ উদ্ভিদসহ আগাছা পুড়ে গেছে। তবে বছরের পর বছর এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে জোরালো কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নারায়ণ সাহা বলেন, এখানে এত বড় বনাঞ্চল নেই যেখানে প্রাকৃতিকভাবে আগুন লাগতে পারে। যদি দুর্ঘটনাবশত কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো হয়, তাহলে তা টিলার জীববৈচিত্রের জন্য বিরাট ক্ষতি। এখানে বনজ ও ফলদ উদ্ভিদের ক্ষতির পাশাপাশি পাখি, ছোট প্রাণীদের বসবাসের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ে। এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিষয়ে আরও সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূসম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ শাখার প্রধান অধ্যাপক আবুল হাসনাত বলেন, টিলাকেন্দ্রিক বনাঞ্চল পুড়ে যাওয়া জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। দ্রতই এসব ঘটনার কারণ উদ্‌ঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ