এক পরিবারের ৬ জনসহ কিশোরগঞ্জের ১৪ জন পুড়ে পুড়ে ছাই

প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, |                          

নিখোঁজদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানা পাটুলি ইউনিয়নের দক্ষিণ কালিয়াকান্দা গ্রামের দিন মজুর চাঁন মিয়ার ছেলে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় অভাবের সংসারে ঈদের কেনাকাটার অর্থ সংগ্রহে কাজে যোগ দিয়েছিলেন।

অপরদিকে, করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কদম তলী গ্রামের দিনমজুর মালেক মিয়ার মেয়ে মাহমুদা এবং কটিয়াদী উপজেলার সহশ্রাম ঢোলদিয়া ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের দরিদ্র বাচ্চু মিয়ার মেয়ে তাসলিমা অভাবের সংসারে হাল ধরার পাশাপাশি নিজেদের বিয়ের অর্থ সংগ্রহে ওই কারখানার শ্রমিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এদের সেই সংগ্রামী জীবনের সুখ স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত রূপগঞ্জের আগুনে পুড়ে ছাই হলো।

কারাখানা কর্তৃপক্ষ ও সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান এলাকাবাসী ও মানবাধিকারদের।

জানা গেছে, ওই কারখানার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার শিমূল কালিয়া দক্ষিণ কালিয়াকান্দা গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী শ্রমিক পরিবারের একমাত্র পুত্রসন্তান নাজমুল, কটিয়াদী উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের তাসলিমা, রাবিয়া,মাহমুদাসহ ৭ জন এবং করিমগঞ্জ উপজেলার কদমতলী ও মথুরা পাড়া গ্রামের জাহানারা, সাহেলা, রেহেনা, হাকিমা, আহাদ, জাহানারা (২)ও মাহমুদা নামের মোট ১৪ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। এদের মধ্যে করিমগঞ্জ উপজেলার কদমতলী গ্রামের এক পরিবারের ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজদের পরিবারের লোকজন জানিয়েছে, ডিএনএ টেস্টের জন্য নিখোঁজদের স্বজনদের ঢাকায় তলব করেছে প্রশাসন।

শুক্রবার রাতে ক্ষতিগ্রস্ত-নিখোঁজ এসব শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষের বাড়ি সরেজমিন পরিদর্শনকালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য চোখে পড়ে। পরিবার-স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছিল এলাকার আকাশ-বাতাস। গ্রাম জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

এ সময় দানাপাটুলি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দীন এবং জয়কা ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার ও মানবাধিকার কর্মী মো. নিজাম উদ্দিন কারখানা মালিক ও সরকারকে এসব দরিদ্র ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়েছেন।