গাড়ি-সিএনজি বন্ধ, রাজধানীতে রিকশার দাপট

প্রকাশিত: ৩:৪২ অপরাহ্ণ, |                          

দেশে করোনা সংক্রমণ ঊর্দ্বমুখী হওয়ায় সোমবার সকাল থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে সীমিত লকডাউন। নতুন বিধিনিষেধের আওতায় পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহ বন্ধ রয়েছে।

সকাল থেকে রাজধানীর সড়কগুলোতে দেখা গেছে রিকশার দাপট। সুযোগ পেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া হাঁকাচ্ছে। বাধ্য হয়ে ৫০ টাকার ভাড়া দেড়শ’ টাকা দিয়ে রিকশায় চড়ে অনেকে ছুটে চলেছেন গন্তব্যের দিকে।

রিকশাওয়ালাদের পকেট কাটার বেশি শিকার হয়েছেন অফিসগামীরা। সকাল থেকে সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কোনো গাড়ি না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুণে অফিসের দিকে ছুটে চলেছেন তারা।

রাজধানীর উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় কথা হয় রাজীব নামে এক বেসরকারি চাকুরের সঙ্গে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কষ্টোপার্জিত টাকা রাস্তায়ই চলে যাচ্ছে। আবদুল্লাহপুর থেকে এয়ারপোর্ট যাচ্ছি ১০০ টাকা ভাড়ায়। তাও সঙ্গে আরেকজনকে নিয়েছেন রিকশাওয়ালা।

বিমানবন্দর এলাকায় কথা হয়, মাসুম নামে এক যুবকের সঙ্গে। তিনি জানান, ফার্মগেট যাবেন, কোনো বাহন পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে রিকশায় ভেঙে ভেঙে পথ চলতে হচ্ছে। কতক্ষণে গন্তব্যে পৌছতে পারবেন তা নিয়ে দ্বিধায় এই যুবক।

ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল থাকলেও তারা সড়কে চলবে কী চলবে না— এ দ্বিধায় রয়েছে। একজন উবারচালককে আবদুল্লাহপুর থেকে কুড়িল চৌরাস্তা যাবেন কিনা জিজ্ঞাসা করলে রাজি হন। ভাড়া হাঁকেন ৫০০ টাকা। এতটুকু দূরত্বে এত ভাড়া কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পথে পথে যে ব্যারিকেট তাতে সামনে এগোনো যাবে কিনা নিশ্চিত নয়। ধরলেই মামলা, গুনতে হবে তিন-চার হাজার টাকা।

সড়কে ছিল ব্যক্তিগত গাড়ি। কোথাও কোথাও যানজট লেগে গেছে ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার দাপটে।

রাজধানীর শাহবাগ, রামপুরা, মিরপুর, গুলিস্তান, বনানী, মহাখালী, ফার্মগেট এলাকায়ও সোমবার সকালে প্রায় একই চিত্র দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠান শুধু প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কর্মীদের আনা-নেওয়া করতে পারবে। কিন্তু সব প্রতিষ্ঠান এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারছে না। এ কারণে অফিসগামীদের দুর্ভোগ।

সম্প্রতি দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণ হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সারা দেশে ১৪ দিনের কঠোর শাটডাউন দেওয়ার সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সুপারিশের আলোকে সারা দেশে নতুন করে বিধিনিষেধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তিন দিনের সীমিত লকডাউন দিয়ে রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে সর্বাত্মক লকডাউন।