সিলেটের ইতিহাস নারীদের গৌরব আর সম্মানের ইতিহাস-সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুদ রানা বলেছেন,সিলেটের ইতিহাস নারীদের গৌরব আর সম্মানের ইতিহাস। এই ইতিহাস এবং গৌরবকে বহন করেই নারীদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। সিলেটের বিপ্লবী লীলা নাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, তাঁর যাত্রা পথ সহজ ছিল না। কিন্তু তবুও তিনি থেমে থাকেন নি। থেমে না থাকার কারণেই আজ তিনি স্মরনযোগ্য। একইভাবে সিলেটের জৈন্তারাজ্য শাসন করেছেন একজন রানী। তিনি বলেন, নারী শক্তি জেগে উঠলে দেশ জেগে উঠে। তাই নারীদের জাগাতে হবে, লক্ষ্যে পৌছাতে হবে।
তিনি সোমবার ( ২৯ ডিসেম্বর) সারদাহলে সিলেটে সিলেট উইমেন চেম্বারের বাৎসরিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির ব্ক্তব্য রাখছিলেন। এ সময় প্রধান অতিথি আরো বলেন, প্রবাসী অধ্যূষিত সিলেটের প্রতিটি পরিবার ব্যবসায়ীক ভাবে এগিয়ে থাকলেও পরিবারের নারী সদস্যদের তারা সেদিকে উৎসাহিত করছেন না। ফলে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও নারীরা এই খাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারছেন না। কিন্তু তবুও অল্প সংখ্যক নারী ঝুঁকিকে মোকাবেলা করে এগিয়ে আসতে পেরেছে বলেই- এখন সিলেটে হাজারো নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিকে সহায়ক সকল কর্মসূচি নিয়ে নারী উদ্যোক্তাদের পাশে থাকার আহবান জানান।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতাপাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলেয়া ফেরদৌসি তুলি। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন, চেম্বারের পরিচালক রেহানা আফরোজ খান। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, চেম্বারের পরিচালক সামা হক চৌধুরী। সভায় চেম্বারের বার্ষিক কার্যবিবরণী পাঠ করেন জাকিরা ফাতেমা লিমি চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,চেম্বারের পরিচালক সাইমা সুলতানা চৌধুরী লিমি,রেহানা ফারুক শিরিন ও শাহানা আক্তার।
সভায় রেহানা আফরোজ খান বলেন, আজকের এই সভা, নিছক একটি সভা নয়, এই সভা স্বচ্ছতা,জবাবদিহিতা, পরিকল্পনা,উন্নয়ন,পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ একটি সম্ভাবনার ক্ষেত্র। এই সভাকে আমরা আরও একটি নতুন সিদ্ধান্তে পৌছে যাবার সোপান হিসেবে বিবেচনা করতে পারি।
জাকিরা ফাতেমা লিমি চৌধুরী উইমেন চেম্বারের দায়িত্ব গ্রহণ পরবর্তী সকল কার্যক্রম তোলে ধরেন। এসময় তিনি আগামী কার্যক্রম সফল ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য চেম্বারের সকল সদস্যবৃন্দের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে পরিচালক সামা হক চৌধুরী,আজকের এই সভা একটি মিলনমেলায় রুপ নিয়েছে। এই সভাকে আমরা উইমেন চেম্বারের বাৎসরিক উৎসব হিসেবে মনে করি। এখানে আমরা সবকটি ভিন্ন প্রাণ অভিন্ন হয়ে একটি সুরে আওয়াজ তুলছি। সেই আওয়াজ নারীদের অগ্রযাত্রার আওয়াজ,সকলে এক হয়ে যাওয়ার আওয়াজ। প্রতিটি কানে কানে সেই আওয়াজই আগামীর ইতিহাসে সিলেটের নারীদের নতুন দিগন্তে পৌছে দিবে।
সভাপতির বক্তব্যে আলেয়া ফেরদৌসি তুলি বলেন, উইমেন চেম্বারের নতুন পরিষদের বেশি দিনের নয়। তবে আজকের এই আয়োজনে সকল সদস্যদের অংশগ্রহণ আমাদেরকে উদ্ধুব্ধ করেছে, প্রাণীত করেছে। বৎসরের একটি দিন শুধু মাত্র সাধারণ সদস্যদের জন্য। এই দিনে আমরা কেবল আপনাদের পরামর্শ, ও না বলা কথাগুলো শুনবো। আপনাদের সকল পরামর্শ নিয়েই আগামীর পথেে এগিয়ে চলাই উইমেন চেম্বারের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পুরণের মূল সহযাত্রী চেম্বারের সকল শ্রেণীর সম্মানীত সাধারণ সদস্যবৃন্দ। পরে সভাপতি সভায় উপস্থিত সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন, সদস্য নাজমীন আরা চৌধুরী,গোলাপী বেগম,জান্নাতুল রেশমা,তপতী রানী দাস,হাসনা হেনা খানমসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।