সিলেটে দুই দিনব্যাপী “হাছন উৎসব শেষ হলো

সিলেট নিউজ ওয়ার্ল্ড
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৩, ২০২৫
সিলেটে দুই দিনব্যাপী “হাছন উৎসব শেষ হলো

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অহিংস, বুদ্ধিবৃত্তিক, স্রষ্টা ও পরকালকেন্দ্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হোক- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মরমী সাধক হাছন রাজার স্মরনে সিলেটে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী “হাছন উৎসব-২০২৫”। রবিবার ২১ ডিসেম্বর ও সোমবার ২২ ডিসেম্বর নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ উৎসবে বাংলা লোকসংস্কৃতির কিংবদন্তি এ মরমী সাধকের জীবন, দর্শন এবং লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। বাংলার চিরায়ত সুফিবাদী সংস্কৃতিকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হাছন রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় উৎসবে ছিল আলোচনা সভা, আবৃত্তি ও হাছন রাজার গান পরিবেশনা।

সোমবার উৎসবের সমাপনী দিনে হাছন রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি বাংলাদেশের সভাপতি ডা. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম অচিনপুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (কেমুসাস) এর সাধারণ সম্পাদক সেলিম আউয়াল, বাংলাদেশ বেতারের সিলেট আঞ্চলিক প্রধান আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তারেক, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা জাসাসের সদস্য সচিব রায়হান হোসেন খান।

সভায় বক্তারা বলেন, হাছন রাজার মানব জীবনকে গভীরতম উপলদ্ধি থেকে বুঝার চেষ্টা করেছেন। তাঁর গান ও দর্শনের প্রধান দিক হচ্ছে মানবতা ও মরমী সাধনা। তাঁর মানসলোকের পরিচয় পাওয়া যায় রচিত গানের মধ্যে। সহজ সরল স্বাভাবিক ভাষায় মানবতার চিরন্তন বাণী উচ্চারিত হয়েছিল তার রচনাগুলোতে। হাছন রাজার গানগুলো শুনলে মনের মাঝে আধ্যাত্মবোধের জন্ম হয়। তাঁর বাণী আমাদেরকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে শন্তিময় সমাজ গড়ার প্রেরণা দেয়। ভেদাভেদ ভুলে সমাজ থেকে অনাচার দূর করার প্রেরণা দেয়।

বক্তারা আরা বলেন, সমাজে হাছন রাজাকে নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি আছে। এই বিভ্রান্তি দূরতে হবে হাছন রাজাকে নিয়ে গবেষণা করতে হবে। তাঁর দর্শন পৌঁছে দিতে হবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। বক্তারা এই হাছন উসব অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ডা: জহিরুল ইসলাম অচিনপুরী আরও জানান, শনিবার থেকে ‘হাছনরাজা লোক উৎসব ২০২৫’ শুরু পূর্ব ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু শহীদ ওসমান হাদীর মৃত্যু ও রাষ্ট্রীয় শোক দিবসকে সম্মান জানিয়ে ২১ ডিসেম্বর থেকে উৎসব শুরু করা হয়। দুইদিনব্যাপী হাছন উৎসবে শীত ও কুয়াশায় ঘেরা ব্যস্ত নগরীতে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

উৎসবে লেখক দেওয়ান সমসের রাজা চৌধুরী এবং হাছন গবেষক সামারীন দেওয়ানকে হাছন রত্ন প্রদান করা হয়। সামারীন দেওয়ানের পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন সেলিম আউয়াল। এছাছা অনুষ্ঠানে হাছন রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্য ও পৃষ্ঠপোষকদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। তারা হলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মো. সোলেমান হোসেন চুন্নু, বিরহী কালা মিয়া, আবু সালেহ আহমদ, আসাদুজ্জামান নূর, সৈয়দ নিয়াজ আহমদ, সাখাওয়াত হোসেন পীর, সেলিম মিয়া, সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল হাসান ও নাহিদা আক্তার এবং পৃষ্ঠপোষক ডা. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম অচিনপুরী, মো. মোজাহিদ আলী, শামীম রেজা চৌধুরী ও সিরাজুল ইসলাম। সিলেট অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি গুলজার আহমেদ হেলাল।

উৎসবে উপস্থিত ছিলেন  রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সোলেমান হোসেন চুন্নু, সিনিয়র সহসভাপতি বিরহী কালা মিয়া, সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর, সংগঠনের সহ-সভাপতি এবং সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দৈনিক সিলেট বাণী’র নির্বাহী সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক এম এ হান্নান, সহ-সভাপতি আহমেদুর রহমান ইকবাল, সহ-সভাপতি শাহ মোঃ আলী রব, সহ-সভাপতি (হবিগঞ্জ জেলা) শাহ মোহাম্মদ চৌধুরী মিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম কামরুল চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম কামরুজ্জামান মাসুম, সহ-সাধারণ সম্পাদক (সিলেট জেলা) মোঃ সেলিম মিয়া, সহ-সাধারন সম্পাদক (সুনামগঞ্জ জেলা) সায়েম আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক (হবিগঞ্জ জেলা) শাহ আলমগীর, সহ-সাধারণ সম্পাদক (মৌলভীবাজার জেলা) আব্দুর রব তাপাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শিবলু, সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) শফিক মিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এম আমির উদ্দিন পাভেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জহির চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শাহান উদ্দিন নাজু, সাখাওয়াত হোসেন পীর, জাহাঙ্গীর আলম, ফেরদৌস আহমদ, হাসনাত কবীর, আল আমিন, মুন্নি খানম, মোহাম্মদ কামাল, সোলেমান হক টিপু, গোলাম কিবরিয়া আনু, ফয়সাল আহমদ, সৈয়দ আলী আক্তার চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম রাসেল, মোহাম্মদ মোস্তাক চৌধুরী, আব্দুল খালেক, দবিরুজ্জামান দিপ, সোহেল রানা, নাহিদা চৌধুরী, মোঃ লুকমান আলী, আকরাম, ফারুক আহমদ সুজন, শাহাদাত হোসেন, দুঃখী হাসান, গীতিকার সামির আলী, রঞ্জন কর, জুয়েল চৌধুরী, শাহেদ আহমদ শান্ত, নাজির আহমেদ নজির, এমএইচ হাফিজ, রাকিব আহমদ রুবেল, নিলুপা ইসলাম নিলু, সাজু মাহমুদ, তমাল চৌধুরী , দৈনিক ইনফো বাংলা সিলেট ব্যুরো প্রধান উৎফলবড়ুয়া , সাংবাদিক মোঃ আলমগীর আলম, ওয়াহিদ চৌধুরী, সোহাগ আহমেদ প্রমুখ।