ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে:ফুটফুটে বাচ্চা রেখে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে কীটনাশক পানে মৃত্যু

ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে:ফুটফুটে বাচ্চা রেখে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে কীটনাশক পানে মৃত্যু
আজিজ উল্লাহ, টেকনাফ:
টেকনাফের বাহারছড়া’র চাকমা উপজাতি কিশোরী ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে এক মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করার এক বছরের মাথায় আত্মহত্যা করেছে।তার রয়েছে ১৫দিনের একজন নবজাতক শিশু।
সুত্র জানায়,গত বুধবার (৯ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ১১ টায় সময় স্থানীয় মাথাভাঙা এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে আতা উল্লাহ’র(১৮)পাশ্ববর্তী স্বামীর ভাতিজী জাহান নুর হাবিবা নামের এক মেয়ের বিবাহের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করতে বিউটি পার্লারে গিয়ে সাজগোজ করার জন্য তার ধর্মান্তিত স্ত্রী সাদিয়া (লাকিং মে)টাকা চেয়ে না পাওয়ার পর দম্পতি উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তার স্বামী একটা তাপ্পর লাগিয়ে পাশ্ববর্তী বিয়ের বাড়িতে চলে যায় এতে করে স্বামীর প্রতি অভিমানে এবং সাজার টাকা না পাওয়ার বায়না ধরে ক্ষেতের পোকামাকড় দমনের ছোট্ট ছোট্ট সরিষার ন্যায় এক ধরনের কীটনাশক বিষ পান করে সাদিয়া সেসময় বাড়ির সবাই বিয়ের বাড়িতে ছিল পরে আতা উল্লাহ’র বড়বোন ছেনু আরা বেগম বাড়িতে এসে দেখতে পায় হালিমাতুজ সাদিয়া (লাকিং মে) বমি করতেছে এতে বমির সঙ্গে বিষের আলামত দেখতে পায়।পরে সেদিন রাত আনুমানিক ১২.০০ পর টমটম করে ননদ ইয়াসমিন আক্তার,স্বামী আতা উল্লাহ ও ভাশ্বশুর করিম উল্লাহসহ সাদিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তবু কিছু টা সময় ক্ষেপণ হয়েছে।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওয়াশ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করলে পরবর্তীতে সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে নিহত হয়।
এদিকে সাদিয়ার রয়েছে আতিফা নামের মাত্র ১৫ দিনের ফুটফুটে একটি শিশু।সেই পাচ্ছে না মায়ের দুধের স্বাদ নয়ন ভরে দেখেনি মায়ের মুখও জানে না তার মা বলতে দুনিয়াতে কেহ নেই, কখনো দুধের পিপাসায় কান্নায় মুছা যায়।একটু সুখের আশায় নিজের ধর্মবর্ণ বির্সজন দিয়ে সবাইকে ছেড়ে এসে ছোট্ট আবদারটুকু রাখানো কি যেত না?জামাই টেকনাফে গ্লাস আসবাবপত্র নির্মাণের কাজ করে সাপ্তাহিক একবার বাড়িতে আসে সেই অপেক্ষায় চেয়ে থাকে স্ত্রী কখন বাড়ি ফিরবে একমাত্র স্বামী,তাদের একের প্রতি অপরের প্রেম- ভালোবাসার এতটুকুই কমতি ছিল না ধর্ম ত্যাগী মেয়ের আপন বলতে একমাত্র স্বামী এবং তার আশ্রয় প্রশ্রয়ের শেষ ভরসাই সেই। এতটুকু আবদারতো থাকতেই পারে এসব বলছেন পাশ্ববর্তী কয়েজন মেয়ে।কিন্তু তারা উভয়ের বিবাহের বয়স পূর্ণ ছিল না।মেয়ের ১৫ আর ছেলের ১৮ বছর। বয়স কম হওয়ায় দুজনেই একটু জেদি-আবেগী।অল্পতেই বড্ড আবেগ তরুণীর।
“গত বছর লাকিং মে(১৫) বর্তমান মুসলিম হয়ে নতুন নাম (হালিমাতুজ সাদিয়া)কে স্থানীয় কাদের পাড়া হামিদুল হকের ছেলে ঈসা,জাকের হোসেনের ছেলে ইয়াসিন ও তাদের সহযোগী আবুসহ মিলে লাকিং মেয়ে কে নিয়ে যায় পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে আতা উল্লাহ(১৮) বিবাহ করতে সহায়তা করে বলে অভিযোগ করেন নিহতের মা কেসিং চাকমা।এবিষয়ে একটা জিডি করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি”
শ্বাশুড়ি রহিমা খাতুন বলেন,” আতা উল্লাহ তার একেবারে ছোট ছেলে সেই কুমিল্লা ছিল ঈসাসহ কয়েকজন মিলে সাদিয়াকে( লাকিং মে)তার সঙ্গে বিয়ে করে দেয়।বিবাহ বন্ধন সম্পাদন হয়েছে কুমিল্লাতেই, গত পাঁচ-ছয় মাস আগে তারা বাড়িতে আসে তাদের সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল আগে কোন ধরনের ঝগড়া বিবাদ ছিল না।সেই নিয়মিত ৫ বেলা নামাজ দোয়া পড়ত এই বছর পুরা ৩০টি রোজা রেখেছে সামান্য একটা বিষয়ের জন্য এত বড় কাজ করেছে, বাড়ির সবাই তাকে অনেক আদর স্নেহ করত “।
১০ ডিসেম্বর তার লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে নিহতের লাশ পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি অপারেশন সেলিম রেজা।
কক্সবাজার সদর থানার এসআই হালিম জানান ” পোস্টমর্টেম ও সুরতহাল করা হয়েছে এবং হিমঘরে রয়েছে লাশের জন্য উভয় পক্ষ আবেদন করেছে বিদায় দুপক্ষকে আদালতের আশ্রয় লাভের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে যেহেতু এক পক্ষের দাবি সেই বৌদ্ধ ধর্ম অবলম্বনকারী স্বামী পক্ষ বলছে মুসলিম।
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ উল্লাহ বলেন, লাশ স্বামী পক্ষকে প্রদান করা হলে ইসলামী শরিয়তের ভিত্তিতে স্থানীয় গোরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে বলে জানান তিনি ”
আজিজ উল্লাহ,
টেকনাফ।
১২ ডিসেম্বর২০২০