১০ বছর ধরে ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা আসামি খালাস

প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, |                          

স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাগেরহাটের মোলারহাট উপজেলার সাহেব আলী ফকিরকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রায় ১০ বছর ধরে কনডেম সেলে বন্দি ছিলেন সাহেব আলী ফকির। আর কোনো মামলা না থাকলে তাকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ইনজেকশন দিয়ে বিষ প্রয়োগে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বগুড়ার কাহালু উপজেলার গোলাম রব্বানীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গোলাম রব্বানীকে কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ রোববার পৃথকভাবে ওই দুটি মামলায় এ রায় দেন। উভয় মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট এসএম আমিনুল ইসলাম।

বাগেরহাট জেলার মোলারহাট থানার আডুয়াদিঘী গ্রামে স্ত্রী শিউলী বেগমকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ২০১০ সালের ১৫ জুন সাহেব আলী ফকিরকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর তার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। আর আসামিও হাইকোর্টে আপিল করেন। উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৫ সালের ৫ জুলাই রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন কনডেম সেলে বন্দি সাহেব আলী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আজ (রোববার) তাকে খালাস দিয়ে রায় দেন।

ওই মামলার বাদী নিহতের বাবা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছিলেন, পুলিশ তাকে মামলা করতে বাধ্য করেছে। আর আসামি ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, পুলিশ তাকে নির্যাতন করে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে। এ ছাড়া নিহতের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্যাতনের কোনো চিহ্ন নেই। ভিকটিম আত্মহত্যা করেছে বলে প্রতিয়মান হয়। এসব বিবেচনায় নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সাহেব আলীকে খালাস দেন।

অপরদিকে বগুড়ার কাহালু থানার কাহালু গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রীর মৃত্যু হয় ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর। ভিকটিমের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও কেমিক্যাল পরীক্ষায় ধরা পড়ে কার্বামেট নামক বিষ প্রয়োগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ অবস্থায় নিহতের ভাই গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে আবেদন দাখিল করেন। আদালত এই আবেদন মামলার এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে থানাকে নির্দেশ দিলে ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে এজাহার গ্রহণ করা হয়। বিচার শেষে নিম্ন আদালত ২০১০ সালের ২১ জুলাই গোলাম রব্বানীকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরবর্তীতে হাইকোর্ট ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর এক রায়ে ওই মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন গোলাম রব্বানী। এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ (রোববার) আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ।