সিলেট ২৭শে জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৫৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২১
শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় নারী আসামিকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের উজিরপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই নারীর শারীরিক পরীক্ষা করে জখম, নির্যাতনের চিহ্ন ও নির্যাতনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সেই সঙ্গে এ কার্যক্রম একজন নারী রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসক দিয়ে করানোর পাশাপাশি বরিশালের সিনিয়র জেল সুপারের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে আসামিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে অভিযুক্তদের কঠোর বিচার দাবি করেছেন আসামির স্বজন, আইনজীবী ও মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ।
তবে আসামির এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন উজিরপুর থানার ওসি। আর বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
মামলা, থানা পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৭ জুন মৃতের ভাই বরুণ চক্রবর্তী থানায় শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন। যেখানে মিনতি বিশ্বাস ওরফে মিতু অধিকারীসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলার আসামি হিসেবে মিনতি বিশ্বাস ওরফে মিতু অধিকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানা পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলি আদালত মিতুর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই মিতুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এ সময় তাকে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখে এর কারণ জানতে চান আদালত। মিতু আদালতের কাছে তাকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে।
আদালত একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে তার দেহ পরীক্ষা করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ণ পায়। এর পর আদালত আইন অনুযায়ী মিতু অধিকারীর বিবৃতি লিপিবদ্ধ করেন। পাশাপাশি আদালত তার যথাযথ চিকিৎসা প্রদান এবং তাকে নির্যাতনের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে।
মিতুর ভাই উত্তম অধিকারী অভিযোগ করে বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে তার বোনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পর তাকে রিমান্ডের নামে থানায় নিয়ে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. মাইনুল এবং এক নারী কনস্টেবল। এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য তাদের হুমকি ও চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
মিতুর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান বলেন, পুলিশ রিমান্ড চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে সতর্কতার সঙ্গে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ মিনতিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে শারীরিক ও স্পর্শকাতর স্থানে নির্যাতন করেছেন, যা যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শামিল।
আবার আদালত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠালে সেখানেও পুলিশ প্রভাব খাটিয়েছে এমন অভিযোগ তুলে তিনি এ ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।
তবে থানায় রিমান্ডের সময় মিতু অধিকারীকে শারীরিক কিংবা যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন উজিরপুর ওসি জিয়াউল আহসান।
এ ছাড়া রিমান্ডে নারী আসামিকে ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
এদিকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, আদালত মিতু অধিকারীকে চিকিৎসা প্রদান এবং অন্যান্য (শারীরিক ও যৌন নির্যাতন) বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই নারীকে চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি তাকে নির্যাতনের বিষয়ে যথা সময়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত ১০টায় শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মিতু অধিকারীকে। পরে তাকে হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসি সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়। সেখানে কয়েক ঘণ্টার চিকিৎসা প্রদান শেষে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
Chief Editor : Afroz Khan
Editor: Sunny Ahmed
Executive editor: Mohammed Taizul islam,
Message editor : Shahan Shah Ahmed
Call: +88 01995-019920
Office : West World Shopping City (7nd Floor), Zindabazar, Sylhet 3100
Email : info.Sylhetnewsworld@gmail.com
Web : www.SylhetNewsWorld.com