বিরোধীদের তোপের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৪:৩২ অপরাহ্ণ, |                          

বগুড়া ও সাতক্ষীরায় অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। এক সাংসদ মন্ত্রীকে লজ্জাহীন উল্লেখ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন। তবে এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সংসদের অধিবেশন কক্ষে দেখা যায়নি।

শনিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরে বিরোধী দলের উপনেতা জাতীয় পার্টির জি এম কাদের বলেন, এক বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে অবস্থায় ছিল এখনও সেখানেই আছে। কোনো উন্নতি হয়নি। তার নিজ এলাকার হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য যেসব চিঠি দিয়েছেন এবং সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি বলেও জানান তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ছয় থেকে সাতবার ফোন দিলেও ধরেননি জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, মন্ত্রীর সহকারীদের ফোন করার পর মন্ত্রীকে জানানোর কথা বলি। কিন্তু মন্ত্রী ফোন করেন না।

দুই দিনে অক্সিজেনের অভাবে বগুড়ায় ২৪ জন মারা গেছে উল্লেখ করে বিএনপির সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ বলেন, করোনায় জন্য নির্ধারিত মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল ২৫০ বেডের। এই হাসপাতালে ৮টি আইসিইউ বেড আছে। কিন্তু মাত্র দুটি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে। ফলে বাকি আইসিইউ বেড কোনো কাজেই লাগছে না। বগুড়ায় ৩টি হাসপাতালের ৪৫০টি বেড রোগীতে ঠাসা জানিয়ে তিনি জানান, নতুন রোগী ভর্তি হতে পারছেন না।

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য গোটা হাউজকে অপমান করেছে, এটা সংসদে অপসারণ হওয়া দরকার। উনি বলেছেন, হাসপাতালে মিশিন চলে না, চেয়ার, লোক লাগবে, এগুলো তো আপনাদের (এমপি) দেখতে হবে। কিন্তু আপনারা তো সেটি দেখেন না। নার্স, ডাক্তার ও যন্ত্রপাতি লাগলে তো আপনাদেরকেই বলতে হবে। শুধু অভিযোগ দিলে তো হবে না। যা প্রয়োজন আছে তা ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান হিসেবে এগুলো দেখার দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তায়।

সাংসদ হারুন বলেন, মাননীয় স্পিকার অবজেকশন আছে। আমি আপনার (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) কাছে কপি পাঠিয়েছি। ১০০ বেডের হাসপাতাল করার পরে ২০২০ সালে ১২ ডিসেম্বর মন্ত্রী সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি বরাবর শূন্য পদে চাহিদা দিয়ে একাধিকবার আমি নিজে গিয়েছি। এরপর উনি কিভাবে বলেন। মন্ত্রণালয়ে গেলে উনাকে (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) পাওয়া যায় না। আর উনি এধরণের কথা বলে দিলেন। আমি মনে করি, এই অংশটুকু ইসপানস হওয়া দরকার। গোটা হাউজে তো ৯০ ভাগের বেশি সরকারি দলের এমপি। তারা কি কেউ সরকারি হাতাপাতালে দায়িত্ব পালন করেন না। এটা উনার বক্তব্য স্পষ্ট।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, মন্ত্রী আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করেছেন। আমাদের দেশে আমেরিকার চেয়ে কম লোক মারা যায়। এটা কি তার কৃতিত্ব? এক বছর মন্ত্রী কী করলেন? ৩৭টি জেলায় অক্সিজেন নেই। মানুষ মারা যাচ্ছে।

সাতক্ষীরায় অক্সিজেনের অভাবে এক ঘণ্টায় ৭জন ছটফট করে মারা গেলেন উল্লেখ করে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আইসিইউ ও এসডিইউতে রোগী গেলে কোনো চিকিৎসা হয় না। সেখানে কী হয়। কেউ জানে না। মানুষের মৃত্যুর কি কোনো দাম নেই? একটা তদন্ত কমিটি করুন এবং এর প্রতিবেদন প্রকাশ করুন।