সীমান্তে কঠোর লকডাউনের সুপারিশ

Jaber Jaber

Ahmed

প্রকাশিত: ২:০৫ অপরাহ্ণ, |                          

দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছেই। সঙ্গে মৃত্যুও। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী জেলা ও তার আশেপাশের জেলাগুলোতে। এক গ্রাম থেকে ছড়িয়ে পড়ছে আরেক গ্রামে। প্রতিদিনই সীমান্তের গ্রামগুলোতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সীমান্তের ১৩টি জেলায় করোনা পরিস্থিতি ক্রমে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে কাবু জেলাগুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবার সীমান্তবর্তী ১৩ জেলায় ‘কঠোর লকডাউন’ দেয়ার সুপারিশ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি দেশের উচ্চ সংক্রমণশীল এই জেলাগুলোকে ৩টি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে।

সম্প্রতি সীমান্তের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দল সীমান্তবর্তী জেলা পরিদর্শন করে। সেখান থেকে ঢাকায় ফিরে দলটি সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এসব জেলায় লকডাউনের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এগুলো হলো: চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ। এই জেলাগুলোয় শনাক্তের হার ১০ শতাংশের উপরে। তৃতীয় ক্লাস্টারে রয়েছে ৫টি জেলা। এগুলো হলো: সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা ও পিরোজপুর। এসব জেলায় শনাক্তের হার ৫ থেকে ১০ শতাংশ।

এর পেছনের কারণ হিসেবে যোগ হয়েছে সীমান্তে অবাধে পারাপার। সীমান্তের চোরাই পথের সরু গলি দিয়ে কৌশলে চলছে এপার-ওপারে অবাধে যাতায়াত। এদিকে সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৬৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। এদিন ৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৫২ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। আগের দিন এ জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ।

সীমান্তের পার্শ্ববর্তী নড়াইলেও সংক্রমণ বাড়ছে। শনিবার এ জেলায় শনাক্তের হার ছিল ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়ে ৫০ দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে। বাগেরহাটে শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ, যা আগের দিন ৩০ শতাংশ ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এক সপ্তাহ ধরে করোনায় মৃত্যু আবার বাড়ছে। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলেও মৃত্যু বাড়ছে। বিভাগওয়ারি হিসাবে মৃত্যু বাড়ার হার সবচেয়ে বেশি রাজশাহীতে। মে মাসের শুরু থেকে মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা নিম্নগামী ছিল। তবে ঈদুল ফিতরের পর থেকে এ পর্যন্ত এই হার ক্রমেই বাড়ছে। গত ৭ দিন পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৬৬।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, সীমান্তবর্তী বেশকিছু এলাকায় লকডাউন চলছে। প্রথমেই সেই লকডাউনটা কার্যকর করতে হবে। কারণ, যেভাবেই হোক আমাদের সংক্রমণ ঠেকাতে হবে। হাসপাতালে শয্যা-আইসিইউর সংখ্যা বাড়ালেও রোগী যদি কমানো না যায়, তাহলে তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। এজন্য প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সবচেয়ে জরুরি। এরজন্যে স্থানীয় জনগণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। যেখানে যেখানে লকডাউন চলছে, সেটা কঠোরভাবে মানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে হবে। কেউই একা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। প্রশাসনসহ সবাইকে এর জন্যে কাজ করতে হবে।