সিলেটে বিমানের লন্ডন টিকিটের জন্য হাহাকার

প্রকাশিত: ২:২২ অপরাহ্ণ, |                          

সিলেট থেকে বৃটেন ফেরত যেতে হাজারো যাত্রী টিকিটের অপেক্ষায়। আগামী ৯ই এপ্রিলের আগে তারা বৃটেনে ফেরত যেতে চান। এ কারণে টিকিটের জন্য হাহাকার চলছে সিলেটে। কিন্তু টিকিট মিলছে না। এই অবস্থায় এসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) পক্ষ থেকে অতিরিক্ত তিনটি ফ্লাইট চেয়ে বিমানকে পত্র দেয়া হয়েছে। সিলেটে বিমানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- এখনো অতিরিক্ত ফ্লাইট চালুর কোনো সিদ্ধান্ত তাদের কাছে আসেনি। তবে- অতিরিক্ত একটি ফ্লাইট বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় বৃটেনের লাল তালিকাভুক্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ।

এ কারণে বাংলাদেশ থেকে বৃটেন ফেরত যাত্রীদের নতুন নিষেধাজ্ঞা ও নতুন নিয়মের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ৯ই এপ্রিল থেকে বৃটেনে কার্যকর হচ্ছে নতুন নিয়ম। আর এ বিষয়টি জানার পর সিলেটে অবস্থানরত বৃটেন প্রবাসীরা ৯ই এপ্রিলের আগে সেখানে ফিরে যেতে চান। সিলেটের ট্র্যাভেলস এজেন্সির মালিকরা জানিয়েছেন- গতকাল পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার যাত্রী বৃটেন ফেরত যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তারা অতিরিক্ত দামেও টিকিট নিতে আগ্রহী। কিন্তু বিমানের টিকিট মিলছে না। ঢাকা থেকে আজ বৃটেনের হিথ্রোতে যাবে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট। কয়েক দিন আগেই এই ফ্লাইটের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। সর্বশেষ আগামী ৭ই এপ্রিল যাবে সিলেট থেকে আরেকটি ফ্লাইট। ওই ফ্লাইটেও টিকিট নেই। এজন্য আটাব’র পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ফ্লাইট চেয়ে গতকাল সকালে বিমান কর্তৃপক্ষকে পত্র দেয়া হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন ট্র্যাভেলস এজেন্সির পক্ষ থেকেও পত্র দেয়া হয়েছে। ন্যূনতম আগামী ৬ই এপ্রিল একটি ও ৮ই এপ্রিল আরেকটি ফ্লাইটের দাবি জানিয়েছে তারা। সিলেটের লতিফ ট্র্যাভেলসের স্বত্বাধিকারী জহিরুল হক শিরু জানিয়েছেন- তারা ২০০ আসনের চাহিদা চেয়ে বিমান কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। গতকাল বিকাল থেকে চাহিদা আরো বেড়েছে। বিশেষ করে বৃটেন প্রবাসীদের মধ্যে যারা দেশে বেড়াতে এসেছিলেন তাদের রিটার্ন রয়েছে। এসব যাত্রীরা বেশি ফেরত যেতে চান। তবে তারা অগ্রাধিকার দিচ্ছে বৃটেনে যাওয়া শিক্ষার্থী ও পারিবারিক ভিসায় যারা যাচ্ছেন তাদের। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা বৃটেন না ফিরে গেলে সমস্যা হতে পারে। এ কারণে বৃটেনের পাসপোর্টধারীদের পাশাপাশি দেশী পাসপোর্টধারীদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, মানবিক বিবেচনায় কমপক্ষে বিমানের তরফ থেকে আরো তিনটি ফ্লাইট দেয়া উচিত। এতে কিছুটা সংকট লাঘব হবে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, আটাব নেতৃবৃন্দসহ সিলেটের বিশিষ্টজন এবং যুক্তরাজ্য থেকে কমিউনিটি নেতারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি’র সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতা চান। পররাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রবাসীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে সুপারিশ করেছেন বলে জানিয়েছেন সিলেটের আটাব নেতারা। বাংলাদেশ বিমান সিলেটের ম্যানেজার ফারুক আলম মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘সিলেটে বৃটেন ফেরত যাত্রীদের টিকিটের চাহিদা বেড়েছে। সবাই ৯ই এপ্রিলের পূর্বে বৃটেন ফিরতে চান। আমরাও চেষ্টা করছি সিলেটে থাকা প্রবাসীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে। বিষয়টি বিমানের ঊর্ধ্বতনদের অবগত করা হয়েছে। অতিরিক্ত একটি ফ্লাইট দেয়ার কথা আমরা শুনেছি। তবে অফিসিয়ালি এখনো কোনো আদেশ আসেনি।’ তিনি জানান, ‘আগামী ৯ই এপ্রিলের মধ্যে বিমানের দুটি ফ্লাইট যুক্তরাজ্য যাবে। এর মধ্যে আজ যাচ্ছে ঢাকা থেকে একটি ও ৭ই এপ্রিল সিলেট থেকে যাবে আরেকটি ফ্লাইট। এই দুই ফ্লাইটের আসন আগেই শেষ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।’ এদিকে বিমানের মার্কেটিং ডিরেক্টর মো. শওকত হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন- ‘আগামী ৮ই এপ্রিল অতিরিক্ত একটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হতে পারে। এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’