চাঁদা না দেয়ায় শাহপরাণ মাজারে হামলা ও লুটপাট

প্রকাশিত: ২:৪৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২১ | আপডেট: ২:৪৯:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২১

চাঁদা না দেওয়ায় হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজারে হামলা লুটপাট করা হয়েছে এমন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে শাহপরান থানায়। এ ঘটনায় শাহপরাণ থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ ও ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। হামলার সময় মসজিদের দান বাক্স থেকে ১ লক্ষ, গদ্দিঘরের থাকা মোসাফিরের খাবারের জন্য রক্ষিত ১ লক্ষ ৪০ হাজার ও মাজারের দায়িত্বে থাকা আব্দুল আজিজ খাদিমের ৫০ হাজার টাকা লুট করে নেওয়া হয়। এসময় মাজারের দায়িত্বে থাকা ৪ জনকে মারপিট করে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত এক মাস আগে শাহপরাণ থানার লালকাটঙ্গি গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে বেলাল আহমদ, মৃত ফজল মিয়ার ছেলে বদরুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম তাজ মিলে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন মাজার কর্তৃপক্ষের কাছে। এর সূত্র ধরে গত বুধবার রাতে পবিত্র রমজান মাসের ১ম তারাবির নামাজের শেষে বেলাল ও বদরুল মাজার কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। তখন লালকাটঙ্গি গ্রামের গৌছ উদ্দিন পাখি মেম্বারের ছেলে ইমন গদ্দিঘরের সামনে রাখা মসজিদের দান বাক্স শাবল দিয়ে ভেঙ্গে ১ লক্ষ টাকা নেয়। এসময় তাজ গদ্দিঘরে প্রবেশ করে ভাংচুর করে মোসাফিরের জন্য রাখা ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেয়।

তখন বেলাল ও অন্যান্যরা মিলে মাজারের খাদেম আজিজকে মেরে গুরুত্বর আহত করে। এ সময় তার পকেটে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। আর বদরুল, নজমুল, আলীসহ অন্যরা মিলে মহিলা ইবাদতখানায় প্রবেশ করে দায়িত্বে থাকা চম্পা বেগমকে মারপিট করে হাত ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা চালায় এবং তার শ্লীলতাহানি করে। পরে স্থানিয় লোকজন ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

হামলার এ ঘটনায় শাহপরাণ থানার লালকাটঙ্গি গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে বেলাল আহমদকে প্রধান আসামী ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২০জনকে অজ্ঞাতনামা রেখে এসএমপি’র শাহপরাণ থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন হযরত শাহপারণ (রহ.) মাজার ওয়াকফ স্টেট ইসি নং ১৩৬৫১ মোতাওয়াল্লির পক্ষে জামাল আহমদ খাদিম।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএমপি’র শাহপারণ (রহ.) থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান।
হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার ওয়াকফ স্টেটের মোতাওয়াল্লি সৈয়দ মামুনুর রশিদ জানান, একটিপক্ষ মাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও জায়গা দখল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আর মাজার কর্তৃপক্ষের নিকট নিয়মিত চাঁদা দাবি করে আসছে। এসকল বিষয়ে গত বছরের ২৬ জানুয়ারি হযরত শাহপরাণ (রহ.) দরগা ওয়াক্ফ কমিটির পক্ষ থেকে ওয়াক্ফ প্রশাসক বাংলাদেশ বরাবরে ৭৭৭৭ নম্বর ডায়রিতে লিখিত আবেদন করা হয়। পরবর্তিতে বাংলাদেশ ওয়াক্ফ স্টেট তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওয়াক্ফ প্রশাসক, বাংলাদেশের অতিরিক্ত সচিব এস,এম, তারিকুল ইসলাম গতবছরের ২৭ জুলাই ( স্মারক নং: ওঃপ্রঃসিঃ সুঃ/২৬ (১)) আদেশে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে পত্র প্রেরণ করেন।
এতে মাজারে আগতদের সার্বিক নিরাপত্তা ও মাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়।

এসএমপি’র শাহপারণ (রহ.) থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান জানান, মাজারে হামলার ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মাজার কর্তৃপক্ষের দাখিলকৃত অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।