সিলেটে ১৮৩ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে গৃহ হস্তান্তর করা হবে মঙ্গলবার :জেলা প্রশাসক

প্রকাশিত: ১২:৪৭ পূর্বাহ্ণ, |                          

:সিলেট জেলায় ১৮৩ টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে গৃহ হস্তান্তর করা হবে।মঙ্গলবার (১১জুন) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ৫ম পর্যায়ের (২য় ধাপ) জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপকারভোগীদের ঘর প্রদান করা হবে। সিলেট জেলার ৪টি উপজেলা -বিয়ানীবাজার, বিশ্বনাথ, গোয়াইনঘাট ও ওসমানীনগরে মোট ১৮৩টি গৃহ হস্তান্তর করা হবে। উদ্বোধন দিনে সংশ্লিষ্ট উপজেলার সর্বোচ্চ জনপ্রতিনিধি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

রোববার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলেন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে সিলেটে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেকট্রিক ও অনলাইন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন নোয়াখালী (বর্তমান লক্ষীপুর) জেলার রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা গ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন, অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়। তাঁর বর্তমান সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো পুনরায় শুরু করেন। তিনি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মডেল’ প্রবর্তনের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া মানুষকে মূলধারায় উন্নয়নের সম্পৃক্ত করার নিমিত্ত কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিনে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন এবং একই বছর তিনি সারা দেশের গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে শুরু করেন “আশ্রয়ণ প্রকল্প”।

“বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতক করে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১১ জুন মঙ্গলবার সকাল ১১:০০ ঘটিকায় মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৫ম পর্যায়ে ২য় ধাপে ২ শতক জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের নির্ধারিত গৃহসমূহ উপকারভোগী পরিবারের নিকট হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। এই অনুষ্ঠানে দেশের ৫১ জেলার ১৮৮ টি উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতক করে জমিসহ গৃহ প্রদান করা হবে। উদ্বোধনী দিনে সিলেট জেলার ৪ টি উপজেলা- বিয়ানীবাজার, বিশ্বনাথ, গোয়াইনঘাট ও ওসমানীনগরে মোট ১৮৩ টি গৃহ হস্তান্তর করা হবে।

জেলা প্রশাসক জানান প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গত ১৪.১১.২৩ তারিখে সিলেট জেলাকে “ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত” জেলা ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২৮.১২.২০২২ তারিখে হালনাগাদকৃত তালিকা অনুযায়ী সিলেট জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ৫৪৭২ টি।

৫৪৭২ টি পরিবারকে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম পর্যায়ে যথাক্রমে ৩১৩১, ১১৫, ১১৫৮, ৯৫৫ ও ১১৩ টি মোট ৫৪৭২ টি গৃহ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

৫ম পর্যায়ে ২য় ধাপের এই ১৮৩টি ঘরের মধ্যে ওসমানীনগরে ১১০টি, বিশ্বনাথে ৩টি, গোয়াইনঘাটে ৪০টি ও বিয়ানীবাজারে ৩০ টি গৃহ নির্মিত হয়েছে। ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ উপজেলার ১১৩টি গৃহের নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

এ জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৪০টি ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৩০ টি দীর্ঘ দিনের পুরাতন জরাজীর্ণ সি আই শীট ব্যরাক প্রতিস্থাপন করে সেমি পাকা একক গৃহ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এছাড়াও বিশ্বনাথ উপজেলার অন্তর্গত রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দে ৭১টি প্রতিবন্ধী পরিবারকে একটি করে খ-শ্রেণির সেমিপাকা গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা সম্পদের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে আশ্রযয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে হতদরিদ্র ভিক্ষুক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল মানুষকে ভূমি ব্যবহারের আওতায় এনে অন্যান্য সামাজিক সুবিধা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। জলবায়ু উদ্বাস্তু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া), বেদে, ভিক্ষুক, দলিত, হরিজনসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া অন্যান্য সম্প্রদায়কেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এ কর্মসূচিতে।

একটি ভূমিহীন পরিবারের একটি ঘর পাওয়ার মাধ্যমে দারিদ্যের দুষ্টচক্র থেকে বের হয়ে আসার অপার সম্ভাবনা তৈরী হয়। মুজিববর্ষে বিশেষ উদ্যোগে সমাজের ছিন্নমূল মানুষকে জমি ও গৃহ প্রদানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে সক্ষম হবো।