রমযানে নানামুখী চাপে আছেন মানুষ

প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, |                          

!! মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান!!

রমযান মাস সিয়াম সাধনার মাস। তাকওয়া অর্জনের মাস। ধর্মভীরু মুসলিমেরা গোটা বছর অপেক্ষা করে থাকেন, কখন এ মাসটি আসবে, আর আমরা ইবাদতে, স্বস্তিতে, দোয়া-আজকারের মধ্য দিয়ে এই মাসটি পালন করবো। রমযান মাস নেকি হাসিলের মাস। যে কোনো ভালো কাজ করলে এর সওয়াব এই মাসের ওসিলায় আল্লাহ তাআলা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পৃথিবীতে সবচেয়ে কষ্টকর রমযান অতিবাহিত করছে ফিলিস্তিনের গাজার মুসলিমরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা অহরহ দেখছি, কীভাবে ঘাসপাতার স্যুপ তৈরি করে মজলুম এ মানুষগুলো ইফতারি করছে। আমাদের প্রতিদিনের ইফতারিতে ও দোয়ায় যেন গাজার এই মজলুম মানুষগুলো স্মরণে থাকেন।
তবে বিশে^র অন্যতম বৃহত্তম একটি মুসলিম রাষ্ট্র হলেও বাংলাদেশের মুসলিম সমাজও এই রমযানে খুব একটা ভালো নেই। নানামুখী চাপে আমাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। নানা ধরনের উদ্বেগে আমাদের মন বিষন্ন। এই রমযান আমাদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনতে পারেনি। বরং নানা ধরনের নেতিবাচক বাস্তবতা রমযান পালনকে খুব বেশি কঠিন করে তুলেছে। কোনো ধরনের যুদ্ধ বিগ্রহ নেই, কোনো ধরনের অবরোধ নেই, তারপরও ক্ষুধার কষ্টে এক ধরনের নীরব দুর্ভিক্ষের মাঝে রমযান পার করছে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ।
এর প্রধানতম কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মুনাফাপ্রবণ এবং প্রতিবছর রমযান আসার আগেই কিছু কিছু দ্রব্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়- এটি কোনো নতুন চিত্র নয়। তবে এবার দ্রব্যমূল্যের বাজারে যেন আগুন লেগেছে। দু মাস আগে নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই বাজার নিয়ন্ত্রণ ও দ্রব্যমূল্যের দাম সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের ভেতর নিয়ে আসার তাৎক্ষণিক প্রতিশ্রুতি দিলেও রমযান মাস পর্যন্ত তারা কোনো সফলতা দেখাতে পারেনি। রোজার কয়েক সপ্তাহ আগেই জানা যায়, রোজায় খেজুরের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। বিপুল পরিমাণ শুল্ক আরোপ করার কারণে সাধারণ মানের খেজুরও এবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে বলেও একাধিক খবর প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিকেরা এই প্রসঙ্গে নিজেদের অসন্তোষও প্রকাশ করেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করার যে নববি সুন্নাত মুসলিমরা পালন করতে অভ্যস্ত, এবারের রমযানে তাও পালন করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু, খেজুরের দাম না কমিয়ে কিংবা শুল্ক প্রত্যাহার না করে উল্টো রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিরা নানা ধরনের তীর্যক মন্তব্য করায় মানুষের কষ্ট ও ভোগান্তি আরো যেন বেড়েছে।
রমযান শুরুর কয়েকদিন আগে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছিল। এটি খুবই সাধারণ বাস্তবতা যে, গাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়লে এর সাথে তাল মিলিয়ে অন্য সব পণ্য সামগ্রীর দাম এমনিতেই বেড়ে যায়। এই প্রেক্ষিতে, রোজার মাস আসার আগে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোই যৌক্তিক ছিল। কিন্তু প্রতি মাসে জ¦ালানি উপকরণের মূল্য এডজাস্ট করার নামে সরকার বারে বারে শুধু দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে। এডজাস্ট করতে গিয়ে দাম কমেছে এমন নজির নেই। সিলিন্ডার গ্যাসের দাম এখন ১৫শ টাকার কাছাকাছি। দু-একটি কোম্পানির কাছে সিলিন্ডার ব্যবসা জিম্মি হয়ে যাওয়ার পর থেকে প্রতি মাসে সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি এখন একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ফলে, বাসাবাড়িতে এবং রাস্তায় যে রান্না করা খাবারগুলো বিক্রি হয়, তার দামও সমান্তরালভাবে বেড়েছে।
রোজার আরেকটি আনুষঙ্গিক উপকরণ হলো শরবত আর শরবতের প্রধাণ উপকরণ লেবু। অথচ এই লেবু এখন আকাশের চাঁদ হয়ে গেছে। প্রতি পিস লেবু ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রোজার প্রথম দিন থেকে। ভালো মানের রসালো লেবুর দাম আরো বেশি। ১৫ টাকা করে পড়ছে প্রতি পিস। সালাদ বানানোর আইটেম বিশেষ করে শসা, গাজর, টমেটোর দাম বেড়ে গেছে হু হু করে। সবুজ শাক সবজির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। ১শ টাকার নীচে কোনো সবজি নেই। বরং ১২০ টাকার ওপরে চলে গেছে প্রতি কেজি সবজির দাম। পেঁেপ বা কাঁচা কলার মতো সবচেয়ে সস্তা সবজিগুলোও এখন ৬০ টাকার নীচে পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ কী খাবে, কোনটা কিনবে- বাজারে গেলে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে যেতে হয়। বাজেটের মধ্যে বা সাধ্যের ভেতর কিছুই পাওয়া যায় না। খালি হাতে বাসায় ফিরে পানি দিয়েই ইফতার করছে বহু মানুষ।
মাছ গোশতের বাজারেও আগুন। রোজার আগে গরুর গোশতের দাম কমানোর একটি কথা শোনা গেলেও কার্যত দাম কমেনি এক টাকাও। উল্টো মুরগির দাম ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। দেশি, পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির দাম বেড়েছে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা। এমনকি, ব্রয়লার মুরগির দামও এখন অনেক বেশি। বেড়েছে মাছের দাম। সবচেয়ে সস্তা মাছ নামে যেগুলো পরিচিত বিশেষ করে তেলাপিয়া বা চাষের পাঙ্গাস মাছের দামও এখন ৩শ টাকা ছুইঁ ছুঁই। আর ফলের বাজারের সামনে দিয়ে যেতেও ভয় লাগে। কোনো ফলের কেজি ৩শ ৫০ টাকার নীচে নেই। বিদেশী বা আমদানিকৃত ফলের দিকে তো তাকানোই যায় না। দেশী ফলগুলোর দামও এবার অস্বাভাবিকভাবে বেশি। বাজারে বড়ো বড়ো সাইজের তরমুজ কেজিতে ৮০-১০০ টাকা হওয়ায় পুরো তরমুজটি ৭শ থেকে ৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য ফলের দামও তুলনামূলক বেশি।
খাবারের দামের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের মানুষের জন্য নতুন এক আজাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে এক ধরনের আইটেমের দাম বাড়লে মানুষ অন্য কোনো আইটেমের দিকে ঝুঁকে গিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতো। কিন্তু এবার এমন কোনো আইটেম নেই যার দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়েনি। দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণও নেই। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি নেই। একটানা বৃষ্টি হচ্ছে এমনও নয়। অথচ কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই প্রতিটি জিনিসের দাম শতকরা ১শ ভাগ বেড়েছে- যা নজিরবিহীন। পৃথিবীর অন্যান্য মুসলিম দেশে রোজার মাসে যেখানে নানাভাবে ছাড় দিয়ে, ভর্তুকি দিয়ে মানুষের প্রতি এহসান করা হয়, সেখানে বাংলাদেশ হলো অদ্ভুত এক দেশ- যেখানে রমযান মাস আসলে মানুষকে আরো বেশি যেন কষ্ট দেয়া হয়।
আমাদের ভেতর থেকে আল্লাহভীতি ও নৈতিকতা পুরোপুরি হারিয়ে গিয়েছে। এর জায়গায় যা এসেছে তাহলো, ব্যক্তিস্বার্থ আর টাকার লোভ। সেদিন একটি খবর দেখে মোটামুটি শিউরে উঠেছি। শুধু একটি প্রতিষ্ঠান তার মজুদগারে ১৩শ মেট্রিকটনের ওপর খেজুর জমিয়ে রেখেছে। শুধু তাই নয়, খেজুরগুলো এ বছরেরও নয়। এগুলো সব করোনার সময় অর্থাৎ ২০২১ সালে দেশে আমদানি করা হয়েছিল। এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০২৩ সালে। অথচ সেই পুরনো ও মেয়াদ উত্তীর্ণ খেজুর জমিয়ে রেখে সেগুলো আবার নতুন করে প্যাকেটিং করে ২০২৪-২৫ সালের তারিখ বসিয়ে বাজারে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। কোনো সভ্য সমাজে এমন দৃশ্য কল্পনা করা যায় না। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ ও বাজারে নজরদারি, ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট গুড়িয়ে দেয়া কিংবা মজুদদারির মতো অনাচার রোধে এখনো পর্যন্ত পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আর তাই জনগণ যে অসহায় অবস্থায় পড়েছে তা থেকে উত্তরণের আপাত কোনো সম্ভাবনাও নেই।
দ্রব্যমূল্যের বাইরে আরো কিছু বিষয় এবারের রমযানকে কঠিন করে তুলেছে। তার মধ্যে একটি হলো রমযান মাসে স্কুল খোলা রাখা। এটি একটি অন্যায্য সিদ্ধান্ত। প্রথমত, স্কুল খোলা থাকলে পিতামাতা ও সন্তান সবাইকেই এককেন্দ্রিক ব্যস্ত থাকতে হয়। বিশেষ করে, যাদের বাচ্চা ছোট, তাদেরকে পড়াতে বাবা-মাকে দিনের একটি লম্বা সময় বিনিয়োগ করতে হয়। অনেক স্কুল এই রোজার মাসে ক্লাস টেস্ট বা অন্য নানা ধরনের পরীক্ষা নিচ্ছে। ফলে, সেগুলোর প্রস্তুতি নেয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি গার্ডিয়ানকেও সম্পৃক্ত থাকতে হয়। ফলে তারা রমযান মাসের হক আদায় করতে পারেন না। রমযান মাসে স্কুল খোলা রাখায় অনেক ছেলে মেয়েও রোজা রাখতে চায় না। অর্থাৎ রমযান মাসে রোজা রাখার জন্য বাচ্চাদের যেভাবে অভ্যস্ত করার বা প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রয়োজন ছিল স্কুল খোলা রাখার কারণে তাও সম্ভব হয় না। আর এর বাহ্যিক কুপ্রভাব হলো নগরজুড়ে যানজট। রমযান মাসে স্কুল খোলা থাকলে দু দফায় বাচ্চাদের স্কুলে আনা নেওয়ার কারণে শহরের রাস্তাগুলোতে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। এসব বিবেচনায় রোজা স্কুল বন্ধ রাখার একটি নিয়মিত চর্চা হিসেবেই পালিত হয়ে আসছিল।
কিন্তু করোনায় দুই বছর স্কুল অনেকটা সময় বন্ধ থাকার কারণে বাচ্চাদের সিলেবাস শেষ করাসহ আরো কিছু অজুহাতে ২০২২ সালে রমযান মাসে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এবার তো সেরকম কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। সিলেবাস শেষ না করারও কোনো অজুহাত দেয়ার সুযোগ নেই কারণ বছরের প্রথমদিকেই রমযান। অথচ এবারও রমযানে স্কুল খোলা রেখে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে রাখা হয়েছে। একজন অভিভাবক স্বপ্রণোদিত হয়ে এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতে রীট করেছিলেন। আদালত সেই রীটের বদৌলতে রোজার মাসে স্কুল বন্ধ রাখার আদেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারপক্ষ নজিরবিহীন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল দায়ের করে এবং শেষ পর্যন্ত স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। এতে করে বাচ্চাদেরকে যেমন রোজার অনুশীলন থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তেমনি পিতামাতাকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে; আর সার্বিকভাবে ইবাদত পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়ে যাচ্ছে আর এর জন্য শহরজুড়ে যানজটসহ আরো অনেকগুলো সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে।
রমযান মাসের ইফতার পালন বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের একটি চিরায়ত ঐতিহ্য। রমযান মাসে সরকার ও বিরোধী দল যেমন একেক দিনে সমাজের একটি করে শ্রেণীর সাথে ইফতার করেন, তেমনি অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাও নিয়মিতভাবে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এবার হঠাৎ করেই রমযান মাসের দুই সপ্তাহ আগের এক মন্ত্রীসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রমযানে ইফতার মাহফিল না করার নির্দেশনা দেন। এটি কী কারণে তা স্পষ্ট নয়। তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, খরচ কমানোর জন্যই এমনটা করা হয়েছে। যদিও গণমাধ্যমগুলো এ বিষয়ে অনুসন্ধানী কোনো প্রতিবেদনও প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা বা রিজার্ভ ফান্ড কি এতটাই নাজুক অবস্থানে চলে গিয়েছে যে, আনুষ্ঠানিক ইফতার মাহফিল আয়োজন করার মতো সক্ষমতাও আমরা হারিয়ে ফেলেছি?
মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও। সেখানকার কর্তাব্যক্তিরাও চিঠি ইস্যু করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ইফতার আয়োজন বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশ^বিদ্যালয়গুলোর ভিসিরাও ভার্সিটিতে বা ক্যাম্পাসে ইফতার আয়োজন না করার নির্দেশ দিয়েছে। সেগুলো সমাজের চিন্তক ও তরুণ সমাজের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এ ধরনের নির্দেশনাকে ধর্মীয় অনুভূতির বিরুদ্ধে আঘাত হিসেবে বিবেচনা করছেন। ফলে, ক্যাম্পাসগুলোতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেখানে উন্মুক্তভাবে ইফতার আয়োজন করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সরকারি নির্দেশনার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছেন।
শুধু তাই নয়, ইফতার আয়োজন ছাড়াও আরো বেশ কিছু অনাচার পরিলক্ষিত হচ্ছে। রোজা উপলক্ষে সাধারণ ছাত্ররা কুরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করলে সেখানে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এ ধরনের আয়োজন বন্ধ করার জন্য বিশ^বিদ্যালয়ের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে শোকজ নোটিশ দেয়া হচ্ছে। তেলাওয়াতের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের খুঁজে খুঁজে শনাক্ত করার অপপ্রয়াস চলছে। এমনকি, তাদেরকে রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার অশুভ প্রয়াসও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সার্বিকভাবে ঘরে বাইরে, প্রতিষ্ঠানে নানামুখী কষ্ট ও যাতনার মধ্য দিয়ে এবার বাংলাদেশের মানুষ মাহে রমযান পালন করছেন। যেভাবে মানসিক স্বস্তি নিয়ে, ইবাদতের মাধ্যমে এই পবিত্র মাসটি অতিবাহিত করার কথা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা তা পারছি না। বরং নেতিবাচক পরিস্থিতি ও প্রশাসনিক নানা নির্দেশনা রমযান মাসের আচারাদি পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। এটি ভাবতে কষ্ট হয় যে বিশে^র কথিত একটি বৃহত্তম মুসলিম দেশ হওয়ার পরও রমযান মাসে এত ধরনের চাপে এখানকার মানুষকে থাকতে হচ্ছে। সচেতন মহলের বোধোদয় হোক। আমরা মানুষের ভোগান্তি বৃদ্ধি করে আল্লাহর অসন্তোষের কারণে পরিণত না হই। রমযান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় সকলেই নিয়োজিত হই। রমযান সকলের জন্য স্বস্তির পরশ নিয়ে আসুক। আমিন।

লেখক: কলামিস্ট ও গবেষক।