হযর শাহজালাল (রঃ) মাজারের ভক্ত বৃন্দ লাকড়ি তোড়া উৎসবে অংশ নেন

সিলেট নিউজ ওয়ার্ল্ড
প্রকাশিত এপ্রিল ২৫, ২০২৫
হযর শাহজালাল (রঃ) মাজারের ভক্ত বৃন্দ লাকড়ি তোড়া উৎসবে অংশ নেন

ওলিকুল শিরমনি হযরত শাহজালাল (র.) মাজারের ওরসকে সামনে রেখে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) লাকরি তোড়া হয়েছে। শাহজালাল (রঃ) মাজারের ভক্ত বৃন্দ সকাল থেকে লাকড়ি তোড়া উৎসবে অংশ নেন। বাদ্যযন্ত্রের সুরে মুখরিত করে তোলেন মাজার প্রাঙ্গন থেকে লাকড়ি সংগ্রহের টিলা পর্যন্ত। সিলেট শাহজালাল মাজারের ঐতিহ্য অনুযায়ী ওরসের তিন সপ্তাহ আগে লাকড়ি সংগ্রহ করা হয়, যা লাকড়ি তোড়া নামে পরিচিত। লাকড়ি তোড়া উৎসবে যারা এসেছেন বা অংশ নিয়েছেন দেখা গেছে, কারও পরনে ছিল লাল ও সাদা জামা, কারও মাথায় লাল পট্টি। হাতে ছিল লাল পতাকা আর লম্বা দা বা তরবারি। জুমার নামাজের পর দরগা প্রাঙ্গণে বেজে ওঠে ‘নাকাড়া’—এক বিশেষ ধ্বনি, যা শতাব্দী পুরনো এক আধ্যাত্মিক ডাকে রূপ নিয়েছে। সেই মুহূর্তেই সমস্বরে উচ্চারিত হয়, “শাহজালাল বাবা কি জয়!” এবং সেই ধ্বনির সঙ্গেই হাজার হাজার ভক্ত পায়ে হেঁটে রওনা হন শহরতলির লাক্কাতুড়া চা-বাগানের নির্দিষ্ট টিলার দিকে। সেখানে গিয়ে তাঁরা কাঠ সংগ্রহ করেন যা পরবর্তীতে শাহজালাল (রহ.)-এর ওরসে রান্নার শিরনিতে ব্যবহার হবে জ্বালানি হিসেবে। বহু প্রজন্ম ধরে এভাবেই পালিত হয়ে আসছে ‘লাকড়ি তোড়া’, যা অনেকেই ‘সিলেট বিজয় দিবস’ বলেও উদযাপন করেন। উৎসবটি কেবল এক আধ্যাত্মিক স্মরণ নয় এটি এক ঐতিহাসিক দিনও। জানা যায়, প্রায় ৭০০ বছর আগে ঠিক ২৬ শাওয়াল দিনেই হজরত শাহজালাল (রহ.) তাঁর ৩৬০ আউলিয়াসহ সিলেটে পদার্পণ করেন এবং হিন্দু শাসক গৌড় গোবিন্দকে পরাজিত করে ইসলামের বিজয় ঘটান। সেই দিনটির স্মরণেই এই লাকড়ি তোড়া উৎসব শুরু হয় এবং আজও তা জীবন্ত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।