নারীর দেহভোগের লোভ দেখিয়ে সাতছড়ি জঙ্গলে যুবক খুন

প্রকাশিত: ৪:৪৪ পূর্বাহ্ণ, |                          

জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি গহীন জঙ্গল থেকে উদ্ধার অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় ও হত্যার ক্লো উদঘাটন করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ । উদ্ধার যুবক মো: আলমগির (২৫ ) মাধবপুর উপজেলার বনগাও গ্রামের মৃত – রহমত আলীর পুত্র । হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যার সার্বিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আনোয়ার হোসেনের তত্বাবধানে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আলী আশরাফের নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর তদন্ত চম্পক দাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা , এসআই মোতালিবসহ একদল পুলিশ পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার ১৭ মাস পর তিন আসামী গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন: মাধবপুর উপজেলার বেজুড়া গ্রামের ছফন উদ্দিন ওরফে ছউফ্ফার ছেলে মুসলিম মিয়া(২৭), বানিয়াচং উপজেলার জাতুকুর্নপাড়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে সুহেল মিয়া(৪০), মাধবপুর উপজেলার খড়কী গামের বাবুল মিয়ার ছেলে মো: রোকন মিয়া(৩০)।

গত ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই চুনারুঘাট থানাধীন সাতছড়ি টিলায় অনুমান ২৫ বছর বয়স অজ্ঞাতনামা যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। লাশের কিছু অংশে জখম থাকায় পুলিশ নিশ্চিত হয় এটি হত্যাকাণ্ড। অজ্ঞাত নামা যুবকের নাম-ঠিকানা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় চুনারুঘাট থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন যার মামলা নং ১৫। পরবর্তীতে লাশটি আঞ্জুমানে মুফিদুল বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি দাফন করা হয়। সর্বশেষ নিবিড় তদন্তে নামেন মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আব্দুল মোতালিব । তিনি প্রযুক্তির মাধ্যমে অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করে আসামী মুসলিম মিয়াকে গ্রেফতার করেন। আসামী মুসলিম মিয়া হত্যার দায় স্বীকার করে ১৮ ডিসেম্বর হত্যাকান্ডের বর্ননা দেয়। মুসলিমের দেয়া তথ্যমতে ২০ ডিসেম্বর রাতে আসামী সুহেল ও রুকনকে গ্রেফতার আদালতে সোপর্দ করেন।

আসামীরা হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে কা:বি: ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বিষদ বর্ননা দেয়। এঘটনায় আজ ২১ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা প্রেস বিফিং এর মাধ্যমে আসামীদের বরাত দিয়ে জানান, আসামিরা টমটম ছিনতাইয়ের জন্য পূর্বপরিকল্পিতভাবে আলমগীরকে নারীর প্রলোভন দেখাইয়া সাতছড়ির গেইটের নিকট টমটম দাঁড় করায়। পরে টমটম রাস্তার অপজিট পাশে রেখে সাতছড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। উদ্যানের অনেক ভিতরে প্রবেশ করার পর চালক আলমগীর সুহেল ও অন্যন্যদের জিজ্ঞেস করে নারী কোথায়। তখন আসামিরা আলমগীরকে গহীন জঙ্গলে টিলার দিকে দেখায়। তখন আলমগীর সহ চারজন জন টিলায় উঠে কোন নারী না দেখে আবার জিজ্ঞেস করে আলমগীর। তখন আসামি সোহেল মিয়া কে ইশারা দিলে মুসলিম মিয়ার গায়ের পরিহিত গেঞ্জি দিয়ে আলমগীরের পিছন থেকে মাথা পেচিয়ে ধরে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গে সোহেল মিয়া আলমগীরকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। আসামি রুকন মিয়া আলমগীরের পায়ে, মুসলিম মাথায় ও হাতে এবং সুহেল মিয়া মুখ ও গলা চেপে ধরে। তখন আলমগির চেঁচামেচি করে এবং সুহেল এর ডান হাতের আঙ্গুলে কামড় দেয়। মুসলিমের এর কোমড়ে থাকা রশি সোহেল মিয়া টেনে নিয়ে মুসলিম সহ সোহেল মিয়া আলমগিরের গলায় রশি ফেছিয়ে আলমগিরের মৃতু নিশ্চিত করে এবং আলমগিরের লুঙ্গির কোঁচায় থাকা টমটমের চাবি ও মোবাইল সোহেল মিয়া নিয়া নেয়। পরবর্তীতে আসামীগণ জঙ্গল হইতে বের হইয়া টমটমনিয়ে পালিয়ে বানিয়াচং গিয়ে ৬০ হাজার টাকা বিক্রিয় করে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।

উল্লেখ্য গত ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই সকালে চুনারুঘাট থানাধীন সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের অনুমান ৩শ গজ উত্তর পশ্চিম দিকের সাতছড়ি ন্যাশনাল পার্কের টিলার উপর জঙ্গলের
থেকে একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিকৃত মৃতদেহ পেলে পরবর্তীতে মৃত ব্যক্তির হাতের ফিঙ্গার নিয়ে নাম পরিচয় সনাক্ত করেন।