বিশ্বনাথে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অপসারণের দাবী এলাকাবাসীর

প্রকাশিত: ৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২০ | আপডেট: ৭:৩৬:পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২০

সিলেটের বিশ্বনাথে এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা রক্ষায় অধ্যক্ষ আবু তাহির মো. হুসাইনের অপসারণ দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী। অধ্যক্ষের দুর্নীতির চিত্র তুলে গত ২০ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয় সচিবালয়ে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তার অপসারণের দাবি জানান মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এহসানুল কবিরসহ প্রায় শতাধিক এলাকাবাসী। সেই সাথে গত ১৩ ডিসেম্বর সিলেট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অনুলিপিও দেয়া হয়েছে।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষ আবু তাহির মো. হুসাইন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে সুনামধন্য এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রসায় দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, মাদ্রাসার হিসাবে গড়মিল, লুটপাট, নিয়োগ বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠাতা পরিবারকে মামলা হামলা, শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি ও নামে-বেনামে চাঁদাবাজি করে মাদ্রাসাকে ক্ষতিগ্রস্থ করার মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, কথা বললে এলাকার অনেক জনগনও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছেন। এছাড়া চলতি বছরের ১ ফেব্রæয়ারি গভর্ণিং বডির সভাপতি মারা যান। আর এই শূন্য পদে এমপির সুপারিশ না নিয়ে ও সভাপতির মৃত্যু সনদ ছাড়াই তার মনোনীত ব্যক্তিকে সভাপতি পদে আনতে হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।

২০১৯ সালের ১২ মার্চ অধ্যক্ষ আবু তাহির মো. হুসাইনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার দুর্নীতির তদন্ত করে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি অধ্যক্ষের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায় মর্মে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি প্রতিবেদন দেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। চলতি বছরের ১১ ও ১৮ ফেব্রæয়ারী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনিত পৃথক আরও দুটি অভিযোগ তদন্ত করে গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। ওই তদন্তেও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

এদিকে, অধ্যক্ষ আবু তাহির মো. হুসাইনকে দ্রæত অপসারণ এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত সুপারিশ করেছেন সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। লিখিত ওই সুপারিশে তিনি উল্লেখ করেন, এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু তাহির মোঃ হুসাইন দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির মাধ্যমে মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিয়ে অর্থ আত্মসাত করে চলেছেন, তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।

এমপিওভূক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হয়েও বিধিবর্হিভূতভাবে একই সাথে স্থানীয় ইউনিয়নের কাজী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন আবু তাহির মো. হুসাইন। তিনি মাদ্রাসার শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠাতার পরিবারকে হয়রানী করার জন্য ওই মাদ্রাসার সাথে জামায়াত-শিবিরের সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ করলে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায়নি। আর অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় মাদ্রাসার শিক্ষক, প্রতিষ্ঠাতার পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। তাই অধ্যক্ষ আবু তাহির মোঃ হুসাইনকে অপসারণ বা অন্যত্র বদলি করা না হলে যে কোন সময় সংঘাত সৃষ্টি হয়ে এলাকায় আইন শৃংখলার অবনতি হতে পারে।