সেবার ব্রতে চাকরি’ স্লোগানকে সামনে রেখে (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হয়েছে

প্রকাশিত: ২:২৪ পূর্বাহ্ণ, |                          

সেবার ব্রতে চাকরি’ স্লোগানকে সামনে রেখে শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে সিলেটে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হয়েছে।

শনিবার (২৩ মার্চ) রাত ৮টায় সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারস্থ জেলা পুলিশ লাইন্সে জেলা পুলিশের আয়োজনে নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফল ঘোষণা করেন নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
জেলা পুলিশ জানায়, সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ২১৭৬ জন আগ্রহী চাকরিপ্রার্থীর মধ্য থেকে ৮৬ জনকে মনোনীত করা হয়। চাকরি প্রার্থীদের ৩ ধাপে শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৬২৯ জন ১৬ মার্চ লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৬১ জন প্রার্থীর মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে ১৩ জন নারী ও ৭৩ জন পুরুষসহ মোট ৮৬ জন প্রার্থীকে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচন করা হয়।
সিলেট শাহপরান এলাকা থেকে মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন জবা পাত্র। তিনি পাত্র সম্প্রদায়ের প্রথম নারী যিনি পুলিশে চাকরি পেলেন। জবা বলেন, আমাদের সম্প্রদায়ের কেউই খুব বেশি লেখা পড়া করতে পারে না। আমার বাবা একজন দিনমজুর। আমার মা বাবা খুব কষ্ট করে আমাকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। আমি পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ।

জৈন্তাপুর উপজেলার জামিল আহমদ মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন। তারা ছয় ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। চাকরি পাওয়ায় ভীষণ খুশি জামিল জানান, শুধুমাত্র যোগ্যতায় কোনো ধরনের টাকা ছাড়াই আমরি চাকরি পেয়েছি। সবাই আমার জন্য দুয়া করবেন। পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষায় উর্ত্তীণ আরেকজন হলেন মারুফ আক্তার। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বাসিন্দা ও ইসমাইল আলীর মেয়ে ।

তিনি বলেন, আমার বাবা একজন মৎস ব্যবসায়ী। পরিবারের একমাত্র সন্তান আমি। ছোট বেলা থেকে পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন ছিল। অনেকেই বলতেন পুলিশে চাকরি পেতে হলে তদবির ও ঘুষ লাগে। কিন্তু এটা মানুষের ভুল ধারণা। মাত্র ১২০টাকা খরচ করে আজকে আমি চাকরি পেয়েছি। এজন্য আমিও আমার পরিবার জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই।

বাবুল মিয়া বলেন, আমার বাবা মা নাই। বোনের কাছে মানুষ হয়েছি। এর আগেও পরীক্ষা দিয়েছি, হয়নি। এবার আমি পাস করেছি। কোনো টাকা পয়সা ছাড়াই আমি আজ চাকরি পেয়েছি। সবাই আমার জন্য দুয়া করবেন।

রকিবুল ইসলাম বলেন, আমার জীবনের একটা স্বপ্ন ছিল পুলিশে চাকরি করবো। কোনো টাকা পয়সা ছাড়া যে, চাকরি পাওয়া যায় তা আজ প্রমাণ পেলাম।

প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের পুলিশ সুপার ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান এবং সততার সঙ্গে চাকরি করার আহ্বান জানান তিনি।