মুড়িয়া হাওয়ার মৎস্য ও কৃষি প্রকল্পের বাস্তবায়ন চাই

Jaber Jaber

Ahmed

প্রকাশিত: ১:০২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০২০ | আপডেট: ১:০২:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০২০

এক সম্ভাবনাময় মৎস্য,কৃষি,পর্যটনময় মুড়িয়ার হাওর চাই প্রকল্প বাস্তবায়ন

সিলেট জেলার বিয়ানীবাজারের মুড়িয়া হাওরের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। বন্যা ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বালুমিশ্রিত পানি এসে হাওরের ১৯টি বিল অনেকটা ভরাট হয়ে গেছে। হাওরে হিজল-করস, বরুণ, চাইলা নলখাগড়া ও জারুল গাছ এখন আর চোখে পড়ে না।

বিভিন্ন প্রজাতির রুপালি মাছও বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ফলে মুড়িয়া হাওরপাড়ের ১৭টি গ্রামের মানুষের জীবিকা নির্বাহ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। গত ৪০ বছরে মুড়িয়া হাওরের উন্নয়নে কয়েকটি প্রকল্প গৃহীত হলেও বাস্তবায়িত হয়নি একটিও। জরুরি ভিত্তিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা না হলে এক দশকের মধ্যে হাওরের ভৌগোলিক অবকাঠামোর পরিবর্তনসহ পরিবেশ ভারসাম্য হবে হুমকির সম্মুখীন। এমন আশংকা পরিবেশ ও হাওর।

বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়ন, বিয়ানীবাজার পৌরসভার সীমানা, শেওলা ও দুবাগ ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে হাওরের বিস্তৃতি আমি মুড়িয়া হাওর অঞ্চলের একজন পূর্ব মুড়িয়ার এ সন্তান হিসেবে বিষয় গুলি উপস্থাপন করিলাম । আয়তন আট বর্গমাইল। একসময় এ হাওরে ১১৫ প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও বর্তমানে বেশির ভাগই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। রানী, বাঘা আইড়, রায়েক, মধু, পাবদা, চিতল, বড় বাইন, রিটা, বোয়াল, কৈ, মাগুর এখন আর চোখে পড়ে না। হাওরের ১৯টি বিল প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। সেচের মাধ্যমে বিলে মাছ ধরারসময় শুধু পুঁটি, টেংরা, ভেদা, শিং, চাপিলা, মলা, দারকিনা জাত ছাড়া অন্য মাছ ধরা পড়ে না।বিশাল হাওরজুড়ে কোথাও মাছের অভয়াশ্রম নেই।

বিয়ানীবাজার মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য এখলাস উদ্দিন জানান, কারেন্ট ও মশারির জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকারের ফলে প্রজনন বাধাগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া বন্যা ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বালুমিশ্রিত পানি ঢুকে বিলগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আগে প্রচুর পাওয়া যেত এ রকম মাছ ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মুড়িয়া হাওর ভারত সীমান্ত ঘেঁষে অবস্থিত। ফলে বছরের পর বছর ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের বালুতে বিলগুলো ভরাট হয়ে গেছে। শীতকালে শুকিয়ে যায়। বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়।হাওর এলাকার লোকজন জানান, ১৫-২০ বছর আগে শীতকালে বালিহাঁস, গলগলি হাঁসসহ দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে হাওরাঞ্চল মুখরিত হয়ে উঠত। এখন মাছরাঙাও চোখে পড়ে না। হিজল-করস, জারুল, বরুণ, চাইলা নলখাগড়াসহ অনেক গাছ মরে গেছে। ফলে দেশী-বিদেশী পাখির সমাগমও কমে গেছে। হাওরের কোড়া পাখি, কড়িকাইট্রা, শামুকভাঙরি, চিল, পানকৌড়ি, নানা জাতের বক হারিয়ে যেতে বসেছে।

মুড়িয়া হাওর ভরাট হয়ে যাওয়ায় ওই অঞ্চল পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে হাওর উন্নয়নের উদ্যোগ না নিলে কয়েক বছরের মধ্যে বিয়ানীবাজার পৌরসভা, শেওলা ও দুবাগ ইউনিয়নসহ ওই অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে স্থায়ী বন্যার সৃষ্টি হবে এবং বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হবেন ৫০ হাজার মানুষ। হাওরের উদ্ভিদ সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে শুধু শণ ও কলুম বন ছাড়া কোথাও কোন গাছ চোখে পড়ে না। এখনও সামান্য যে কয়েকটি গাছ আছে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেসবও মরে যাচ্ছে। বেতবন, পিচাশবন, নলখাগড়া, লুটকিবনও নেই।

হাওরে এক-চতুর্থাংশ গাছ ও বন থাকা অত্যাবশ্যক হওয়া সত্ত্বেও সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন সংস্থার ওই বিষয়ে উদ্যোগ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পরিকল্পিতভাবে মুড়িয়া হাওরের উন্নয়নে ৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন। কয়েক বছর আগে ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও অর্থের অভাবে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

একান্ত প্রয়োজন
মুড়িয়া হাওর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন
গনমানুষের ও রাজনৈতিক দাবী আকারে সবার প্রচেষ্টা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে ।
১) বিয়ানীবাজার–বড়দেশ- মনটেকা হয়ে বড়উধা মাইজকাপন ইনামপুর–আষ্টঘরী টু সারপার বাজার গ্রোথ সেন্টার,, নয়াগ্রাম বিওপি রাস্তা।
২)
শেওলা সেতু-দুবাগ -বড়উধা, তাজপুর হয়ে বড়লেখা সংযোগ রাস্তা,,
“”””
৩)দুবাগ – বড়উধা ভায়া আষ্টঘরী, সারপার বাজার গ্রোথ সেন্টার, নয়াগ্রাম বিওপি,টু লাতু রাস্তা

৪)বালিঙ্গা খাল খনন পূর্বক লেক তৈরী করা।

৫)হাওরের১৯টি বিল খনন ও বাঁধ তৈরি করা।

৬)মাছের অভয়াশ্রম কেন্দ্র স্থাপন।

৭)ওরম পুরি খালে সুইচ গেইট স্থাপন।

৮) হাওরের বাঁধে হিজল গাছ রোপন।

লেখক
মোঃজুবায়ের আহমদ(মাছুম)
আষ্টঘরী পূর্ব মুড়িয়া
বিয়ানীবাজার সিলেট