আল্লামা ইসহাক আল মাদানী আর নেই। জানাজার নামাজ আজ বাদ আছর সিলেট আলেয়া মাদরাসা মাঠে

প্রকাশিত: ১:২৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২৫

আল্লামা ইসহাক আল মাদানী আর নেই। জানাজার নামাজ আজ বাদ আছর সিলেট আলেয়া মাদরাসা  মাঠে

 

বিশিষ্ট আলেম আল্লামা ইসহাক আল মাদানী আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় সিলেট নগরের মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন।

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে তার আত্মীয় গোলাম হাদী সয়ফুল জানান, আল্লামা ইসহাক আল মাদানী গতকাল রবিবার প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।

মরহুমের জানাজার নামাজ আজ বিকেল ৪.৪৫ ঘটিকায় সিলেট নগরীর সরকারি আলেয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
সকলের উপস্থিতি ও দোয়া কামনা করা হয়েছে। আল্লাহ পাক যেনো মরহুমকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মোকাম দান করেন আমীন।

তিনি
মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্য অনুষদে ১৯৮৩ সালে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত বিরল সম্মানের অধিকারী আল্লামা ইসহাক আল মাদানী বাংলাদেশের ১ম ব্যাচের স্কলারশিপপ্রাপ্ত (১৯৭৮) কৃতি শিক্ষার্থী ছিলেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে এমএ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এওয়ার্ডপ্রাপ্ত প্রখর মেধাবী আল্লামা ইসহাক ঢাবির কলা অনুষদে সর্বোচ্চ মার্ক পেয়ে বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।

সৌদি দারুল ইফতার সাবেক মাবউছ আল্লামা ইসহাক আল মাদানী সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামী স্কলার হিসেবে প্রায় ৩৭ বছর (১৯৮৩-২০২০) বাংলাদেশ প্রতিনিধির দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন।

এছাড়া তিনি শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার (পাঠানটুলা, সিলেট) প্রতিষ্ঠাকালীন শায়খুল হাদীস হিসেবে দীর্ঘদিন জ্ঞানের আলো বিতরণ করেছেন। তৈরী করেছেন অসংখ্য আলেম- যাঁরা দেশে বিদেশে ইসলামের দ্যুতি ছড়াচ্ছেন।

দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রীপ্রাপ্ত মাওলানা মুফতি মাযহারুল ইসলাম ওসমান কাসেমী কর্তৃক ২০০৯ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত ‘বিখ্যাত ১০০ ওলামা-মাশায়েখের ছাত্রজীবন’ শীর্ষক গবেষণা গ্রন্থের অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি স্বীকৃতি লাভ করেছেন।

যে তালিকায় রয়েছেন, ইমাম আবু হানীফা (রঃ), আল্লামা ইমাম গাযালী (রঃ), সাইয়েদ আহমদ কবির রেফায়ী (রঃ), হযরত শেখ সাদী (রঃ), আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতী (রঃ), শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দীছে দেহলভী (রঃ), শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী (রঃ), আল্লামা ইকবাল (রঃ)-সহ যুগশ্রেষ্ট ইসলামী স্কলার ও গবেষকবৃন্দ।

আল্লামা ইসহাক আল মাদানী হাফিজাহুল্লাহর আমন্ত্রণে ১৯৮৬ সালের জুলাই মাসে কাবা শরীফের প্রধান ইমাম ও খতীব শায়খ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন সুবায়ল সিলেট সফর করেন।

তিন দিনের এই সফরে কাবার ইমামের বক্তব্য সমূহ আরবী থেকে বাংলায় অনুবাদ করে গণমানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি।

সিলেটের শাহী ঈদগাহে হাজারো ওলামা-সহ লাখো জনতার সমাবেশে ইসহাক আল মাদানীর ভাষান্তর ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।

এই শতকের অনন্য স্কলার হিসেবে তাঁর ইলমী আলোচনার সাবজেক্টিভিটি ও বুদ্ধিদীপ্ত কথামালা প্রাণসঞ্চারক।

ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশ এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমৃদ্ধির মূলমন্ত্র সম্পর্কে তাঁর গভীর পান্ডিত্যপূর্ণ বক্তব্য বিস্ময়কর।

মাহফিলের দর্শক-শ্রোতারা প্রবলভাবে আলোড়িত হন।শান্তিপূর্ণ বর্ণনা ও বিশ্লেষণ শুনে মহান আল্লাহর সাথে বান্দাদের মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়।

শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসহাক আল মাদানী কোরআন-হাদিসের দলিল দিয়ে বিজ্ঞান ভিত্তিক বিশ্লেষণ করেন, যা শুনে উপস্থিত সকলে অনায়াসে ঘনিষ্ঠ বোধ করেন, তাঁরা তা গ্রহন করেন এবং নিজ জীবনে প্রবলভাবে আঁকড়ে ধরেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ