হেফাজতের মামলায় বিএনপির নেতাদের গ্রেপ্তার করছে সরকার: ফখরুল

প্রকাশিত: ৪:০৯ অপরাহ্ণ, |                          

বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে হেফাজতে ইসলামের মামলায় জড়িয়ে সরকার গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।

এতে খুলনায় পুলিশের হামলায় আহত বিএনপি নেতা মোহাম্মদ বাবুল কাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নওগাঁ, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়াসহ দেশব্যাপী পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান, গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এই বিবৃতি দেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির সাথে বিএনপির কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্বেও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে হেফাজতের মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে। রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করতে চাচ্ছে। এটা সরকারের ভ্রষ্টাচার নীতি ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি বলেন, গত ৩০ মার্চ নওগাঁর বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ৩০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় যুবদল নেতা কোহিনুর ইসলামসহ ১৭ জনকে ওইদিনই গ্রেপ্তার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. মোশারফ হোসেন, নওগাঁ পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম সাথী এবং বক্তারপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. আফজাল হোসেন সরদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

“গত ১৪ দিনে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান এফ আই ফারুক, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হেলাল আহমেদ, হালিম ফকির, মহানগর যুবদল সভাপতি মোজাম্মেল হক টুটু, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জনি, ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমান রানা, মহানগর বিএনপি নেতা ওয়াসিম আকরামসহ ১৪ জন, কিশোরগঞ্জে গত ৩ দিনে জেলা বিএনপির ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. কাইয়ুম মিয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের সুমনসহ ২০ জন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোজাফ্ফর চৌধুরী, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবরসহ ১০ জন, পটিয়ায় বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ হাসানসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভয়াবহ করোনার মধ্যেও এখনও পর্যন্ত পুলিশ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নিরীহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করতে তাদের বাড়ী বা পাড়া-মহল্লায় অভিযান চালিয়ে হয়রানী করছে। পুলিশের অপকীর্তি ও হামলায় এসব এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।”

ফখরুল বলেন, স্বাধীনতা দিবসে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে বিএনপি ২৯ মার্চ দেশব্যাপী মহানগর ও ৩০ মার্চ জেলা সদরে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক দেয়। দলের এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় পুলিশ ব্যাপক হামলা, গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জ করে খুলনা মহানগরীর উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ, হামলায় বিএনপি নেতা বাবুল কাজীসহ ৩০ জন আহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোহাম্মদ বাবুল কাজী গতরাতে ইন্তেকাল করেন। পুলিশের হামলায় এই ঘটনায় নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই।

তিনি মোহাম্মদ বাবুল কাজীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

বিএনপি মহাসচিব নওগাঁ জেলা, ময়মনসিংহ মহানগর ও দক্ষিণ জেলা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়াসহ দেশব্যাপী দলের এবং অঙ্গ সংগঠনের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। পাশাপাশি ময়মনসিংহসহ সারাদেশে দমন-নিপীড়ণ, হয়রানি ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে চালানো পুলিশী অভিযান বন্ধের দাবিও জানান।