জর্ডান সংকট ইসরাইলের চক্রান্ত : ইরান

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, |                          

জর্ডানের অশান্তি ও অস্থিতিশীলতার সঙ্গে ইসরাইল জড়িত থাকতে পারে। এমনটাই মনে করছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়ায় যে কোনো ধরনের উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা দখলদার ইসরাইলের স্বার্থের জন্য অনুকূল।

এ কারণে মুসলিম দেশগুলোতে ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা চালিয়েছে এই দেশটি। জর্ডানে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পরদিন রোববার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদে এসব কথা বলেন।

জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শনিবার দেশটির প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি আটক করা হয়। এর মধ্যে সাবেক যুবরাজ প্রিন্স হামজা বিন হুসেইনও রয়েছেন। বিবিসি জানায়, হামজাকে গৃহবন্দি করার পাশাপাশি মোট ১৬ জন লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর মধ্যে বাদশাহ আবদুল্লাহর একজন উপদেষ্টা ও রাজপরিবারের একজন সদস্য রয়েছেন। সম্প্রতি প্রিন্স হামজা কিছু উপজাতীয় নেতার সাথে দেখা করেছিলেন, যাদের মধ্যে তিনি কিছু সমর্থন পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

হামজা অবশ্য কোনো রকম অন্যায় করার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ ছিলেন না। প্রিন্স হামজা তার আইনজীবীর মাধ্যমে বিবিসির কাছে পাঠানো এক ভিডিওতে তার দেশের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অদক্ষতা ও হয়রানির অভিযোগ আনেন।

শনিবার এক ভিডিও বার্তায় হামজা জানান, তিনি ও তার পরিবারকে আম্মানের বাইরে আল-সালাম প্রাসাদে গৃহবন্দি করা হয়েছে। তার যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। তার সব কর্মচারীকেও আটক করা হয়েছে।

হামজার এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন জর্ডানের উপ-প্রধানমন্ত্রী আয়মান সাফাদি। তিনি বলেছেন, প্রিন্স হামজা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

হামজার ভিডিও বার্তার পর তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রিন্স হামজা ও আরও কয়েকজন বিদেশি একটি দলের সঙ্গে মিলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

আয়মান সাফাদি বলেন, প্রিন্স হামজার স্ত্রী প্রিন্সেস বাসমাকে বিমানে করে জর্ডানের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বিদেশি নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি সংস্থাটির নাম বলেননি।

তিনি জানান, মামলা করার বদলে প্রিন্সকে এসব কর্মকাণ্ড থেকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা হয়েছিল, তবে তিনি তাতে নেতিবাচক সাড়া দেন। তবে এখনও তার সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে সাফাদি জানান।

তবে এ ঘটনায় ছেলে হামজার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তার মা রানি নুর। হামজার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগকে ‘বিদ্বেষপূর্ণ অপবাদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। রোববার এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, নিষ্পাপ মানুষের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ অপবাদ রটানো হয়েছে। সত্য জয়ী হবে। আল্লাহ তাদের নিরাপদে রাখুন।’

জর্ডানের এ ঘটনায় এরই মধ্যে মিসর, তুরস্ক ও সৌদি আরবের মতো আরব বিশ্বের আঞ্চলিক শক্তিগুলো বাদশাহ আবদুল্লাহর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও বাদশাহ আবদুল্লাহকে একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসাবে বর্ণনা করে তার প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছে।