এবার কোয়ারেন্টিনে থেকেই বিয়ে করলেন এক লন্ডনি

প্রকাশিত: ৫:৫৬ অপরাহ্ণ, |                          

সিলেটে কোয়ারেন্টিনে থাকা ৯ প্রবাসী উধাওয়ের ঘটনার পর এবার তোলপাড় শুরু হয়েছে কোয়ারেন্টিনে থাকা এক প্রবাসীর বিয়ে নিয়ে। বিষয়টি অনেকটা গোপন থাকলেও প্রশাসন অবগত।

এ নিয়ে তৎপরতা শুরু হওয়ায় বিষয়টি আড়াল করতে মরিয়া কোয়ারেন্টিন হোটেল লাভিস্তা কর্তৃপক্ষ। গত ২০ মার্চ রাতে লাভিস্তা হোটেলে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে গত ১৮ মার্চ বিকালে একই হোটেলেই বর-কনের ‘এঙ্গেজমেন্ট’ হয়। ‘এঙ্গেজমেন্ট’ ও বিয়েতে বাইরে থেকে আসা অতিথিরাও অংশ নেন। কোয়ারেন্টিন নিয়ে এমন অভিযোগ শুধু লাভিস্তা নয়, আরও কয়েক হোটেলের বিরুদ্ধে রয়েছে।

ইতোমধ্যে কোয়ারেন্টিন সেন্টারের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে ব্রিটানিয়া হোটেলকে। কোয়ারেন্টিনের জন্য রাখা ৯ প্রবাসী হঠাৎ উধাও হওয়ার ঘটনায় তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে প্রশাসন। তবে শুধু লাভিস্তা, ব্রিটানিয়া নয়, কোয়ারেন্টিন নিয়ে এ ধরনের আরো অনেক কিচ্ছাকাহিনী রয়েছে অন্য হোটেলগুলোর বিরুদ্ধেও।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৮ মার্চ লন্ডন থেকে আসা ১১ জনকে হোটেল লাভিস্তায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এদের মধ্যে ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার জাঙ্গাইল এলাকার এক নারী (৪৮) ও তার ছেলে (২৮)। তারা যথাক্রমে হোটেলের ৪০১ ও ৪০৬ নম্বর কক্ষে অবস্থান করেন।

কোয়ারেন্টিনে জনসমাগম এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলার কথা থাকলেও ১৮ মার্চ এঙ্গেজমেন্ট ও ২০ মার্চ ওই যুবকের বিয়ের আয়োজন করা হয় ওই হোটেলেই। বিয়ে উপলক্ষে বাইরে বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন বিপণিবিতান থেকে কেনাকাটাও করেন তারা। বিয়ের অনুষ্ঠানে বাইরে থেকে আসা প্রায় ৫০ জন অতিথিও অংশ নেন।

গোয়েন্দা সংস্থাসহ প্রশাসনের কাছে এ সংক্রান্ত সব তথ্য চলে যাওয়ার পরও লাভিস্তা হোটেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন করতেই থাকেন।

হোটেল অভ্যর্থনার দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক তারেক আহমদ প্রথমে পুরো ঘটনা অস্বীকার করলেও পরে তিনি স্বীকার করেন। তার দাবি, বিয়ে নয়, আকদ হয়েছে মাত্র। এতে কাজিসহ ৪ থেকে ৫ জন এসে স্বাক্ষর নিয়েছেন। মূলত মানবিক দিক বিবেচনায় সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

কোয়ারেন্টিন সেন্টার লাভিস্তার মতো আকদ-বিয়ের আয়োজন না হলেও কোয়ারেন্টিনের জন্য সংরক্ষিত অন্য হোটেলগুলোতেও ঘটছে একের পর এক ঘটনা।

এ সংক্রান্ত তথ্য গোয়েন্দা ও প্রশাসনের কাছে থাকলেও প্রবাসী সংশ্লিষ্ট হওয়ায় কঠোর না হয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, গোপনে আকদ-বিয়ে পড়ানো, বাইরে গিয়ে বাজার-হাট করার সুযোগ দিয়ে কোনো কোনো হোটেল কর্তৃপক্ষ দায় পুলিশের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। এটা ঠিক নয়, সার্বিক স্বার্থে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবার আন্তরিক সহযোগিতা কাম্য।