কোম্পানীগঞ্জে বিশৃঙ্খলায় জড়িতরা ছাড় পাবে না: কাদের

প্রকাশিত: ২:১৪ অপরাহ্ণ, |                          

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তও চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

এ সময় দলীয় শৃঙ্খলা কঠোরভাবে অনুসরণের জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়ে অত্যন্ত কঠিন অবস্থানে। দলের শৃঙ্খলা না মানলে যত বড় নেতা বা জনপ্রতিনিধি হোন না কেন, দল ছাড় দেবে না।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আজ বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঢাকায় সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই সম্মেলনে যুক্ত হন তিনি।
গত ৯ মার্চ তার নিজ সংসদীয় আসন কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষে আবারও সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় একজন সিএনজিচালক নিহত হওয়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ইঙ্গিত করে নিজ বক্তব্যে সারাদেশের দলীয় কর্মীদের অনুশাসনমূলক এই নির্দেশনা দেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দায়ীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপে কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ত্যাগীদের কমিটিতে মূল্যায়ন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ত্যাগীরা আওয়ামী লীগের প্রাণ, তাদের কমিটিতে রাখতে হবে। তিনি পকেট ভারী করার জন্য বসন্তের কোকিলদের দলে না টানতে জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

জনগণকে জিম্মি করে কোনও কর্মসূচি দেওয়া যাবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ আমাদের শক্তি, তাদের সেবা করাই মূল লক্ষ্য। নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যের ওপর চাপাতে বিএনপি সিদ্ধহস্ত, তাই তারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে জনগণ ও পুলিশকে দাঁড় করিয়েছে। অব্যাহত ব্যর্থতা আর ক্ষমতার রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়ে বিএনপি এখন দিশেহারা পথিকের মতো বলেও মন্তব্য করেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার জনগণের জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে বলেই জনগণ ভোট দিচ্ছে।‌ দেশের প্রতিটি জনপদ এখন উন্নয়নে দৃশ্যমান। আগামী দিনের রাজনীতি উন্নয়ন আর সমৃদ্ধিকে ঘিরে হবে বলে মত প্রকাশ করে তিনি বলেন, অন্যদিকে বিএনপির অপরাজনীতিতে জনগণের আস্থা নেই, তাই বিএনপিকে অপপ্রচার আর অপরাজনীতি ছেড়ে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসাই জরুরি।

এ সময় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তার বার্তা, ‘ঐক্যের বিকল্প নেই, মতভেদ ভুলে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হবে।’

এদিকে জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী সভাপতি মো. মোকসেদ আলী মণ্ডল। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানাসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ।

জনগণের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ভালো আচরণ করার পরামর্শ দিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, আমরা যদি জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ না করি তাহলে শেখ হাসিনার সকল উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হলে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাঁচাতে হবে। তাদের যোগ্যতার আসনে বসাতে হবে।

সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের জেলা কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট।

সমঝোতা না হওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে দলের উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির কাউন্সিলরদের অংশগ্রহণে ভোট গ্রহণ চলছে।