আইনমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৬

প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, |                          

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের দুই মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে।

কসবা থানায় শনিবার আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধের জন্য দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়েছে বলে রোববার নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।

এসপি জানান, কসবা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আনোয়ার হোসাইন এজাহার নামীয় ২৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-২৫০ আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। ওই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাকির হোসাইনকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শনিবার দিনগত রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন—কসবা পৌর এলাকার তেঁতুইয়া গ্রামের সানু মিয়ার ছেলে মো. রাসেল মিয়া (৩০), মাখন খানের ছেলে হৃদয় খান (২২), তোতা মিয়ার ছেলে সালাউদ্দিন মিয়া (২৭), মানিক মিয়ার ছেলে মো. রবিন (২৫), মো. কানু মিয়ার ছেলে মো. কাইয়ুম (২২) এবং নোয়াপাড়া গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে রবিউল্লাহ (৩২)।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত শুক্রবার কসবা উপজেলা অডিটোরিয়ামে স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন করতে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের সাংসদ ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তার আগমনের প্রাক্কালে বেলা ১১টার দিকে কসবা পৌরসভার বর্তমান মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল ও সম্ভাব্য মেয়রপ্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এমএ আজিজের সমর্থকরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদে ঢোকার সময় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আইনমন্ত্রী মিলনায়তনে উপস্থিত হয়ে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ উদ্বোধন করেন। এর পর উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুপক্ষের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বিব্রত হয়ে মঞ্চ থেকে নেমে নিজ গ্রামের বাড়িতে চলে যান।

পরে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, অজ্ঞাত নামা ২৫০-২৮০ জন এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। হামলাকারীরা কসবা উপজেলা সদরের স্বাধীনতা চত্বরে রাখা চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এ ছাড়া তারা কসবা পুরাতন বাজারে অবস্থিত ব্যাংক এশিয়ার শাখাসহ সীমান্ত শপিং কমপ্লেক্সের বিভিন্ন দোকানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে। তারা উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক থেকে টি আলী কলেজ মোড় পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশের বিভিন্ন ব্যানার, ফ্যাস্টুন ছিঁড়ে ফেলে।

শুধু তাই নয়, আগের ঘটনার জের ধরে দাঙ্গাবাজরা পরবর্তী সময় বিকাল অনুমান সাড়ে ৪টার দিকে পুনরায় কসবা পৌর এলাকার শাহপুরে ইটপাটকেল নিক্ষেপের মাধ্যমে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।