
প্রথমবারের মতো ইরাকে সফরে যাওয়া ক্যাথলিক গির্জার নেতা পোপ ফ্রান্সিসে সঙ্গে দেশটির শিয়া মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা গ্রান্ড আয়াতুল্লাহ আলী সিসতানি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
শনিবার পবিত্র শহর নাজাফে তাদের বিরল সাক্ষাৎ হবে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির খবর বলছে।
একজন ধর্মীয় নেতা হিসেবে মানুষের ওপর নজিরবিহীন ও সূক্ষ্ম প্রভাব রয়েছে সিসতানির। কয়েক দশকের একনায়কের শাসন, দখলদারিত্ব ও সংঘাতের মধ্যেও অনুসারীদের পথ দেখিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
৯০ বছর বয়সী সিসতানি গভীর নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করে আসছেন। প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তিনি নিজের নসিহত মানুষের কাছে পৌঁছে দেন।
এতে তার প্রভাব মোটেও কমছে না। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযানের পর ভোটকেন্দ্র, বিক্ষোভ স্থল কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রে হাজার হাজার ইরাকির কাছে তার বাণী পৌঁছানো হয়েছে।
ব্রুকিং ইনস্টিটিউটের গবেষণা ফেলো মারসিন আল শামারি বলেন, বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় প্রভাব থেকে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেও সিসতানির প্রতি শ্রদ্ধা এতটুকু কমেনি।
১১৯৩০ সালে ইরানি শহর মাশাদে জন্ম নেওয়া সিসতানি পাঁচ বছর বয়স থেকে তার ধর্মীয় পাঠ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি ইরাকে চলে যান। ১৯৯০-এর দশকে তিনি গ্রান্ড আয়াতুল্লাহ পদমর্যাদা অর্জন করেন।
প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন নিপীড়ক সরকারের আমলে তাকে বহু বছর গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে।
কিন্তু ২০০৩ সালের পর তিনি বিচ্ছিন্নতা থেকে বেরিয়ে আসেন। ইরাকে যখন নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি হয়, তখন তিনি সামনে এগিয়ে এসে নজিরবিহীন ভূমিকা রাখেন।
ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন দখলদারিত্বের কঠোর বিরোধিতা করেন তিনি। একটি সার্বভৌম ইরাক ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন সবসময়।
তিনি সবসময় সংযমের কথা বলেন। কিন্তু ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইরাকে নৃশংস সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সময় তিনি অস্ত্রবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করেন।