মিয়ানমারে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির নেত্রী অং সান সু চিসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে আন্দোলন দমন পীড়ন শুরু করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
রাজধানী নেপিদোতে বিক্ষোভে পুলিশ জলকামান ছুড়ে প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
সোমবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে প্রতিবাদ মিছিলে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গেরুয়া পোশাক পরা বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও যোগ দিয়েছেন এবং তারা সামনের সারিতে রয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) লাল ব্যানারের পাশাপাশি মিছিলে তারা বহুরঙা বৌদ্ধ পতাকাও উড়িয়েছেন।
মিছিলে একজনের হাতে উঁচু করে ধরা এক কাগজে লেখা ছিল– আমাদের নেতাদের মুক্তি দাও, আমাদের ভোটকে শ্রদ্ধা কর, সামরিক অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান কর।
অন্য প্লাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল– ‘গণতন্ত্র রক্ষা কর’, ‘স্বৈরতন্ত্রকে না বল’। অনেক প্রতিবাদকারী কালো পোশাক পরা ছিলেন।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি ভূমিধস জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২ আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬ আসন।
কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। দলটি নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তার পর থেকেই দেশটিতে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেটিই সত্যি হলো ১ ফেব্রুয়ারি।
এদিন ভোররাতে সু চিসহ দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের গ্রেফতার করে জান্তা সরকার। ফেসবুক-টুইটার ও ইনস্টাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করা হয়। এক বছরের জন্য ঘোষণা করা হয় জরুরি অবস্থা।
মিয়ানমার দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। ২০০৮ সালে দেশটি গণতন্ত্রের পথে ধাবিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর অধীনে ছিল। মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণে মূল ভূমিকা রাখেন দেশটির স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা অং সান। পরে তার মেয়ে অং সান সু চি ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি দল গঠন করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মূল ভূমিকা রাখেন। এ কারণে তাকে কয়েক বছর গৃহবন্দিও থাকতে হয়েছে।