সিলেট ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:০৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২১
বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ ও ভারত দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান চিরস্মরণীয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি মানুষকে ভারত যেমন আশ্রয়-খাদ্য-রসদসহ সব রকম সহায়তা দিয়েছে, তেমনি হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্য এদেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। সে কারণে আমাদের দু’দেশের বন্ধুত্ব রক্তের অক্ষরে লেখা। করোনাভাইরাস জনিত বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলাতেও ভারতের পক্ষ থেকে বিশ লাখ ভ্যাকসিন উপহার সেই বন্ধুত্বেরই স্মারক।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে এ প্রত্যাশার এসব কথা বলেন।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় শনিবার কলকাতায় প্যারেড গ্রাউন্ডে স্মরণ সভার আয়োজন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বিখ্যাত ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহায়তায় মহান দিবসটি উপলক্ষে সেই ঐতিহ্যবাহী প্যারেড গ্রাউন্ডে কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসকে সঙ্গে নিয়ে যে স্মরণসভা আয়োজন করেছে, তা একটি মাইলফলক উদ্যোগ।
ছাত্রজীবনে জাতির পিতার কলকাতায় অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্ববহ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শহরের ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) থেকে বঙ্গবন্ধু উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ সময়েই তিনি জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং শুদ্ধ রাজনীতির চর্চা ও গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের অনন্য সম্মিলনে ধর্মনিরপেক্ষতা কীভাবে সমাজ জীবনকে বদলে দিতে পারে, তা তিনি কলকাতা শহরে ছাত্রাবস্থাতেই রপ্ত করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পশ্চিমবঙ্গেই প্রায় ৭২ লাখ বাংলাদেশি আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখন গোটা কলকাতা হয়ে উঠেছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের মিলনমেলা। ভারত সরকারের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুরাগী নেতারা কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। সে সময় কলকাতার কবি-সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীসহ সবাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হলে বাঙালি জাতির পিতার প্রতি তাদের আগ্রহ ছিল সীমাহীন। শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে কলকাতায় যাত্রা বিরতি করবেন, এমনটাই ভেবেছিল কলকাতাবাসী। কিন্তু জাতির পিতা তার স্বপ্নের স্বাধীন দেশের মাটিতে আগে যেতে চেয়েছিলেন বলে ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ দিল্লি থেকে সরাসরি ঢাকা যাওয়ার পথে কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে বার্তা পাঠান যে, তিনি অতি শিগগিরই কলকাতা আসবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তিনদিনের সফরে কলকাতায় যান এবং ঐতিহাসিক ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের জনসভায় ইন্দিরা গান্ধীর উপস্থিতিতে লাখ লাখ স্বতঃস্ফূর্ত পশ্চিমবঙ্গবাসীর সম্মুখে ভাষণ প্রদান করেন। সেদিন তিনি উত্তাল জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চিরদিন অটুট থাকবে।
তার অগ্নিঝরা ভাষণে উপস্থিত জনতা আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য ভারতের জনগণ, সরকার, সশস্ত্রবাহিনী, বিশেষ করে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি বঙ্গবন্ধু গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং আসামের জনগণের প্রতিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণের মাহেদ্রক্ষণে স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তার আত্মার শান্তি কামনা করেন। সে সঙ্গে তিনি গভীর কৃতজ্ঞাভরে স্মরণ করেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণের একাত্মতা ও আত্মত্যাগ।
Chief Editor : Afroz Khan
Editor: Sunny Ahmed
Executive editor: Mohammed Taizul islam,
Message editor : Shahan Shah Ahmed
Call: +88 01995-019920
Office : Al Marjan Shoping Centre (3nd Floor), Zindabazar, Sylhet 3100
Email : info.Sylhetnewsworld@gmail.com
২০১০ সাল থেকে শুরু – সরকারি নিবন্ধনের আবেদনকৃত নিউজ পোর্টাল।