রায়হান হত্যা: আইনজীবী পেলেন এসআই আকবর

প্রকাশিত: ২:৪০ অপরাহ্ণ, |                          

ঘটনার আড়াই মাসের মাথায় অবশেষে নিজের পক্ষে আইনজীবী পেলেন রায়হান হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই (বহিষ্কৃত) আকবর হোসেন ভূঁইয়া। গত ১০ ডিসেম্বর আকবরের পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন অ্যাডভোকেট মো. মিসবাউর রহমান (আলম)।

যদিও এর আগে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির রায়হান হত্যার মূল অভিযুক্ত আকবরের পক্ষে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। মো. মিসবাউর রহমান (আলম) সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির ২ নং বারের সদস্য বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে আকবরের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী মিসবাউর রহমান (আলম) বলেন, আকবরের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা চাওয়া হলে আমি তার পক্ষে ওকালতনামা জমা দিয়েছি। আইনি সহায়তা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার।

এর আগে গত ৯ নভেম্বর তারিখে কানাইঘাটের ভারতীয় সীমান্ত থেকে আকবরকে আটক করা হয়। পরদিন ১০ নভেম্বর সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেমের আদালতে তাকে হাজির করে পিবিআই সিলেটের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসাইন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তার ৭ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ১৭ নভেম্বর ফের তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু এ দুই দিনই আকবরের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

এমনকি রায়হান হত্যার পর সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ রায়হানের মা ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে আকবরের পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াবেন না বলে ঘোষণা দেন।

তবে আকবরের পক্ষে আইনজীবীর ওকালতনামা সম্পর্কে জানতে চাইলে সিলেট জেলা বারের সভাপতি এডভোকেট এটিএম ফয়জ উদ্দিন বলেন, আইনি সহায়তা পাওয়া সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। যদিও আমরা ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলাম আকবরের পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াবো না। কিন্তু কেউ যদি আকবরের পক্ষে দাঁড়াতে চায় তাহলে বাঁধা দিতে পারি না। তবে আমরা কেউ এখনো দাঁড়ায়নি। আর আপনি যে আইনজীবীর কথা বলছেন এ ঘটনাটি আমি এখনো জানি না। উনার সাথে আলোচনা করে জানতে হবে।

গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান নামের ওই যুবক। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান।

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিলো, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখন পর্যন্ত এসএমপির মোট সাত পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজন প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া এ পর্যন্ত এস আই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার পুলিশ সদস্যকে। একই সাথে রায়হানের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দাতা হিসেবে সন্দেহভাজন একজনকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।

  • মামলাটি পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে পিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।