আজ মহান বিজয় দিবস

প্রকাশিত: ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ, |                          

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের অবিনাশী কথামালার ভাষণটি বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ভাষণটি শুধু বাঙালি জাতিকেই মুক্তির পথ দেখায়নি, সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষও মুক্তির প্রেরণা পেয়ে থাকে এখান থেকে। এর ব্যঞ্জনা ও তাৎপর্য অনেক গভীর। পরতে পরতে লুকিয়ে আছে মানবমুক্তির আকাক্সক্ষা। ভাষণের একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’ হ্যাঁ, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত পরিণতি পায় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের। আজ বিজয়ের ৫০তম দিন। প্রতি বছরের মতো দিনটিতে অন্ধকার ভেদ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার জন্য অঙ্গীকার করে বাঙালি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে এবারের বিজয় দিবসের তাৎপর্য ও ব্যাপ্তি বিশাল। জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে লড়াইয়ে অনেকটা সফল হয়েছে দেশ। তবে ধর্মীয় মৌলবাদ বারবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এসেছে গণতন্ত্রের ওপর আঘাতও। দেশের পঞ্চাশতম বিজয় দিবসে নতুন বিজয়ের করে শপথ নিতে হবে। কোভিড-১৯ সংক্রমণে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতেও ভুল করবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত জনসমাবেশে জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ সারাদেশের অস্থায়ী বেদিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হবে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পৃথক পৃথক কর্মসূচিও নিয়েছে। আজ স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত না থাকলেও তাদের পক্ষে সামরিক সচিবরা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণীতে দেশের মানুষের কল্যাণ কামনা করেন এবং স্বাধীনতার সুফল সব মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। বিজয়ের ৫০ বছরে পা দেওয়ার ক্ষণে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিতে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে বলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দেশে আজ গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত। সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নয়নের এ ধারাকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন। তা হলেই দেশ পরিণত হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায়। বানীতে রাষ্ট্রপতি দেশে-বিদেশে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে বিজয়ের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের বিজয়-নিশান সমুন্নত রাখার শপথ নাও এই বিজয় দিবসে। প্রতিজ্ঞা কর, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ দেশকে সোনার বাংলাদেশে পরিণত করার।

আজকের বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর নয়। স্বাবলম্বী বাংলাদেশ। একটা সময় ছিল আমাদের উন্নয়ন বাজেটের সিংহভাগ আসতো বিদেশি অনুদান থেকে। আজ বাজেটের ৯৭ ভাগ মেটানো হয় নিজস্ব অর্থায়নে। বাংলাদেশ কারও দয়া বা করুণার ওপর নির্ভরশীল নয়।